দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পনিরের মতো একটি উপকারী খাবারকে এই বর্ষায় ডায়েটে রাখতে হবে। তাতেই শরীরে ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিনের ঘাটতি কিছুটা হলেও মিটবে। সেই সঙ্গে বাড়বে ইমিউনিটিও। এমনকী পেটও থাকবে সুস্থ-সবল।
তাই অহেতুক সময় নষ্ট না করে ঝটপট পনির খাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। নইলে পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে হয়তো সময় লাগবে না।
অত্যন্ত উপকারী একটি দুগ্ধজাত খাবার হলো এই পনির। এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিনের ভাণ্ডার। এমনকী এই খাবারে বেশ কিছুটা পরিমাণে ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম, আয়রণ ও পটাশিয়ামও রয়েছে। এইসব উপাদান শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে পারে। এমনকী দূরে রাখবে একাধিক জটিল অসুখও। তাই তো বিশেষজ্ঞদের একাংশ বর্ষাকালে নিয়মিত পনির খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এখন আপনি জিজ্ঞেস করতেই পারেন, বর্ষায় পনির খেলে কোন কোন উপকার পাওয়া যাবে?
পেটের জন্য সেরার সেরা
আপনি হয়তো মাঝে মধ্যেই গ্যাস, অ্যাসিডিটিতে ভোগেন? কিছুতেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না? সেইক্ষেত্রে সবার প্রথমে বাইরের ফাস্টফুড খাওয়া ছাড়তে হবে। তার পরিবর্তে বাড়ির তৈরি হালকা খাবার খান। পাতে রাখুন পনিরের তরকারি। এতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
তবে পনিরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা অন্ত্রে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়াতে পারে। যে কারণে এই খাবার খেলে ফেরে কোলোনের হল। ওই সুবাদে কাছে ঘেঁষতে পারে না গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো জটিল সমস্যা। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা পনির খেতে ভুলবেন না!
ইমিউনিটি বাড়বে
বর্ষায় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা চাঙ্গা রাখাটা খুবই জরুরি। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করবে পনিরের মতো উপকারী খাবার। কারণ হলো, এই দুগ্ধজাত খাবার হলো প্রোটিনের ভাণ্ডার। এই উপাদান ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য একাই একশো। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত ভিটামিন এবং খনিজের গুণে শরীরের কাছে ঘেঁষতে পারে না একাধিক অসুখ। তাই বিশেষজ্ঞরা বর্ষার ডায়েটে পনির রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই কাজটা করলে পাবেন উপকার।
শক্ত হবে হাড়
আজকাল খুব কম বয়সে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা পিছু নিচ্ছে। তাই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার পূর্বেই আপনাকে এই হাড়ের যত্ন নিতে হবে। সেইক্ষেত্রে যতো দ্রুত সম্ভব পনিরের শরণাপন্ন হন। প্রকৃতপক্ষে এই দুগ্ধজাত খাবারই হলো ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের আঁতুড়ঘর। যে কারণে পনির খেলে বাড়ে হাড়ের জোর। আর তখন কাছে ঘেঁষতে পারবে না একাধিক জটিল অসুখ। তাই নিয়মিত পনির খেতে ভুলবেন না।
ডায়াবেটিসের সেরা খাবার
সুগার রোগীদের একাধিক খাবারে বারণও থাকে। তবে আপনারা চাইলেই নিয়মিত পনির খেতে পারেন। তাতে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি মিটবে। এমনকী নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগারও। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে পনিরের পদ রাখতে হবে।
তবে কখনও ভুলেও পনিরের তেল, মশলা সমৃদ্ধ ঝোল কখনও খাবেন না। এই ভুলটা করলে উপকার তো পাবেনই না, উল্টো শরীরের ক্ষতি হতে পারে। এর পরিবর্তে এর হালকা ঝোল করে খান। তাতে উপকার পাবেন।
ক্যান্সার থেকে দূরে থাকবেন
এই জটিল রোগের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখলে কিন্তু চলবে না। ভালো খবর হলো, নিয়মিত পনির খেলে অনায়াসে ক্যান্সারের মতো জটিল অসুখ থেকে এড়িয়ে চলা যাবে। কারণ হলো, এটিতে রয়েছে ভিটামিন ডি-এর ভাণ্ডার। এই ভিটামিন ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই সারা পৃথিবী জুড়ে এই খাবারের এতো চাহিদা। সুতরাং আজ থেকে পনিরকে আপনার ডায়েটে রাখুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org