দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গল্প যেনো পুরো বলিউডি সিনেমার মতোই। মাত্র তিন মাস বয়সে অপহরণ করা হয় তাকে । দারিদ্র, অত্যাচারের মধ্যে বেড়ে ওঠার পর ২৬ বছর বয়সি এক যুবক জানতে পারলেন যে, তিনি অগাধ সম্পত্তির মালিক!
নাটকীয়ভাবে ওই যুবক এতোদিন পর ফিরে পেলেন নিজের পরিবারকে। গল্প মনে হলেও ঘটনাটি আসলেও সত্যি। চীনের এক পরিবার কয়েক দশক ধরে কোটি টাকা খরচ করার পর হদিস পান হারিয়ে যাওয়া তাদের সন্তানের। ২৬ বছর পর খোঁজ পাওয়া গেলো তার। ততোদিনে বাবা-মাকে ছাড়াই ইতিমধ্যেই জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন ওই যুবক।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬ বছর বয়সী শি কিনশুয়াইকে মাত্র ৩ মাস বয়সে অপহৃত হয়েছিলেন। শির বাবা-মা তাকে খুঁজতে আড়াই দশকেরও বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেন। তবে কোনও লাভই হয়নি। গত ১ ডিসেম্বর অপ্রত্যাশিতভাবে বাবা-মার সঙ্গে পুনর্মিলন ঘটে শির। অনাথ থেকে রাতারাতি বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে যান এই চীনা যুবক। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিজের ভাগ্যকে এভাবে পাল্টে যেতে দেখে শি নিজেও হতবাক হয়ে পড়েন।
ছেলেকে ফিরে পেয়ে যারপরনাই খুশি হন তার বাবা-মা। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন তারা। সেখানে শিকে বেশ কয়েকটি সম্পত্তি এবং একটি গাড়ি উপহার দেওয়ার ঘোষণাও করেন তার বাবা-মা। তাদের অবাক করে দিয়ে শি এই দামি উপহারগুলো প্রত্যাখ্যান করেন। পরিবর্তে তিনি শুধুমাত্র একটি ফ্ল্যাট নেন। শি জানিয়েছেন যে, এই ফ্ল্যাটে তিনি ও তাঁর স্ত্রী ভবিষ্যতে সংসার পাততে চান। শি সংবাদমাধ্যমে জানান যে, তিনি কেবল তার হারিয়ে যাওয়া পরিবারকেই কেবল ফিরে পেতে চেয়েছিলেন। পারিবারিক সম্পদের জটিলতায় নিজের পরিবারকে আর তিনি হারাতে চান না। বর্তমানে একটি লাইভ স্ট্রিমিং চ্যানেলের মাধ্যমে আয় করে নিজের খরচ চালাচ্ছেন তিনি। শির এই কাহিনি চীনের নেটমাধ্যমে ছডিয়ে পড়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org