দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার দেশের রাজস্ব বোর্ডের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে কর আদায় কার্যক্রম থেকে কর নীতি আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দুটি বড় অংশকে আলাদা করার পদক্ষেপ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।
“আমরা নীতিগতভাবে কর আদায় থেকে কর নীতির অংশ আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর অর্থ যারা কর নীতি প্রণয়ন করে তারা কর আদায়ের জন্য দায়ী থাকবে না। তবে কিছুটা সময় লাগতে পারে,” সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) বার্ষিক সম্মেলন ২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন।
আইবিএফবি শহরের গুলশান ক্লাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যেখানে সম্মেলনের বক্তা ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “শিশু” শিল্পের সুরক্ষার জন্য তথাকথিত প্রণোদনা ব্যবস্থার অবসান হতে চলেছে কারণ তারা বছরের পর বছর ধরে কিছু শিল্পকে অযৌক্তিক ছাড় দেওয়ার সংস্কৃতি থেকে আসবে। তিনি বলেন, দেশটি গত ৪০-৫০ বছর ধরে শুল্ক সুবিধা দিয়ে “শিশু” শিল্পের যত্ন নিচ্ছে কিন্তু তারা এখনও একই অবস্থায় রয়েছে, যা অপ্রত্যাশিত।
ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের জরুরীভাবে একটি সমন্বিত, কার্যকর এবং বিশ্বাসযোগ্য মধ্য-মেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রয়োজন, যা বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন অংশীদার এবং বাণিজ্য অংশীদারদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, মাত্র ৬-১২ মাসের অর্থনৈতিক রোডম্যাপ বিবেচনা করে বিনিয়োগ আসবে না। এর জন্য প্রয়োজন মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। বিনিয়োগকারীরা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দীর্ঘমেয়াদে ট্যাক্স কাঠামো, বিনিময় হার এবং সুদের হার ব্যবস্থার মতো কিছু সূচক দেখতে চায়।
“সুতরাং, আমাদের এই সমস্ত জিনিসগুলিকে মধ্যমেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় জমা করতে হবে, যা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন এবং বাণিজ্য অংশীদারদের কিছুটা অবকাশ দেবে,” বলেছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএসএআইডি রিডের মিশন ডিরেক্টর জে. এশলিম্যান বলেন, উন্নয়ন সবসময় টেকসই হয়ে ওঠে যখন এটি স্থানীয় সত্ত্বার নেতৃত্বে থাকে। এই কারণেই ইউএসএআইডি বিভিন্নভাবে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে থাকবে।
“”আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বেসরকারী খাতের শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে,” তিনি যোগ করেছেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আইবিএফবি সভাপতি হুমায়ুন রশীদ বলেন, প্ল্যাটফর্মটি দেশে একটি ভালো ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করতে কয়েক বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশকে সুযোগের জায়গা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে উদ্ভাবন ও সঠিক শিক্ষা, বিশেষ করে ডিজিটাল শিক্ষার মাধ্যমে সুযোগ অন্বেষণ করতে হবে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইবিএফবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org