দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি না যে, সকালে খালি পেটে গুড় খাওয়া আদতেও স্বাস্থ্যকর কি-না। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা। যে কারণে, গুড় ক্যালোরির একটি উৎস। এ ছাড়াও গুড়ের মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণের মতো নানা ধরনের খনিজ রয়েছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঈষদুষ্ণ পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খান। তবে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে গুড়-পানি খাওয়ার রেওয়াজ বহু পুরনো। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, গুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা। যে কারণে, গুড় ক্যালোরির একিট উৎস। এ ছাড়াও গুড়ের মধ্যে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রণের মতো নানা ধরনের খনিজ রয়েছে। পুষ্টিবিদ ইন্দ্রাণী ঘোষের মত হলো, “কায়িক পরিশ্রম করতে গেলে অনেকটা পরিমাণ ক্যালোরি দরকার পড়ে। দিনের শুরুতেই যদি এমন স্বাস্থ্যকর পানীয়তে চুমুক দেওয়া যায়, তাহলে দিনভর এনার্জিও বজায় থাকে। তাহলে সহজেই ক্লান্তি গ্রাস করে না।”
খালি পেটে গুড়-পানি খেলে কী কী উপকার হয়?
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার হয়
গুড় মূলত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের ভান্ডার। তাই শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতাও বজায় রাখে। সকালে নিয়মিত এক গ্লাস পানিতে এক টুকরো গুড় মিশিয়ে খেলে সংক্রমণজনিত রোগব্যাধিও দূরে থাকে।
শরীরে জমা টক্সিন দূর হয়
কিডনি, লিভারে জমে থাকা দূষিত পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করে এই পানীয়টি। শরীর হতে টক্সিন দূর করতে পারলে প্রদাহজনিত অনেক রোগ ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব।
হাড় মজবুত হয়
গুড়ে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাসের মতো খনিজ বিদ্যমান। এই খনিজগুলো হাড়ের ঘনত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে। হাড় মজবুত হলে অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।
শ্বাসযন্ত্র ভাল থাকে
ঠাণ্ডায় শ্বাসযন্ত্রের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতেই পারে। গুড়ের মধ্যে এমন কিছু উপাদান বিদ্যামন, যা দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যে কারণে অ্যাজ়মা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসযন্ত্রের রোগে খানিকটা আরাম পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে, নিয়মিত গুড় খেলে ফুসফুসে জমা পুরনো কফ খুব সহজেই বেরিয়ে আসে।
শক্তির উৎস
গুড়-পানি খেলে শরীরে বল আসে। দিনের শুরুতেই এই পানীয় খেয়ে শরীরচর্চা করলে ক্লান্তি বোধ হবে না। গুড়ের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, আয়রণও রয়েছে, যা শরীরে শক্তির জোগান দেওয়ার পাশাপাশি রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org