দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ৯ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠান শুটিংয়ের সময় ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, যে কারণে শুটিং স্থগিত করা হয়। তবে সেই পর্বটি এবার দেখানো হবে টেলিভিশনে আগামী ৩১ জানুয়ারী শুক্রবার। এই বিশেষ পর্বটি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাজবাড়ীতে ধারণ করা হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার হবে বিটিভিতে। ইত্যাদির এই পর্বের মঞ্চ নির্মাণ করা হয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির সামনে। অনুষ্ঠান ধারণের জন্য বর্ণিল আলোয় সাজানো হয় রাজবাড়ি। আগামী ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর ইত্যাদির এই পর্বটি দেখানো হবে বিটিভিতে। যথারীতি ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা এবং উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত।
স্থানীয়দের অনেকেই বলেছেন, প্রায় ১শ বছর পর রাজবাড়ি যেনো তার হারানো যৌবন ফিরে পেয়েছে। ইত্যাদির শুটিং উপলক্ষে সেদিন ঠাকুরগাঁও জেলায় ছিল এক উৎসবের আমেজ। অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে বসে জমজমাট মেলাও। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন স্থানীয় দোকানীরা, আনা হয় নাগরদোলাও। রাণীশংকৈলে ধারণ করা হলেও দর্শকরা আসেন ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড় ও দিনাজপুর থেকে। বিকাল ৩টা হতে আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন।
সেদিন আমন্ত্রিত দর্শক ছাড়াও অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রায় দুই কিলোমিটার প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়েছিলো। একপর্যায়ে দর্শকরা ইত্যাদির নির্মাতা জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেতকে দেখার জন্য জোয়ারের মতো অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে থাকেন। ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, বসার জায়গা না পেয়ে সেখানকার চেয়ার ছুঁড়ে ফেলছেন তারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইতোপূর্বে ঠাকুরগাঁওয়ে কখনও কোন অনুষ্ঠানে এতো দর্শক সমাগম হয়নি। ইত্যাদির এবারের পর্বে রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারও। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার জীবনের অনেক অজানা তথ্য। গান করেছেন কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী এবং লিজা।
এই পর্বে থাকছে বালিয়াডাঙ্গীতে অবস্থিত এশিয়ার মসবচেয়ে বড় আমগাছ, ঠাকুরগাঁওয়ের পনির, লোকায়ত জীববৈচিত্র্য জাদুঘর ও ধারণস্থান রাজা টংকনাথের রাজবাড়ির ওপর একটি প্রতিবেদন। দেশের অন্যতম দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান ঠাকুরগাঁওয়ের অরেঞ্জ ভ্যালির ওপরেও রয়েছে একটি প্রতিবেদন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org