দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘নেচার’ বিজ্ঞানপত্রিকার অন্তর্গত ‘এনপিজে সায়েন্স অফ ফুড’ জার্নালে এই বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে গবেষকরা দাবি করেছেন, গ্রিন টি খেলে অবসাদের ঝুঁকিও কমে। মানসিক এবং স্নায়ুবিক রোগের আশঙ্কাও অনেকটা কমে যায়।

গ্রিন টি খেলে কেবল ওজনই যে কমে তাই নয়, মনও ভালো থাকে। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও গ্রিন টি-র বড় ভূমিকা পালন করে। এমনটিই দাবি করেছেন গবেষকরা। ‘নেচার’ বিজ্ঞানপত্রিকার অন্তর্গত ‘এনপিজে সায়েন্স অফ ফুড’ জার্নালে এই বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে গবেষকরা দাবি করেছেন যে, গ্রিন টি খেলে অবসাদের ঝুঁকিও কমে। মানসিক এবং স্নায়ুবিক রোগের আশঙ্কাও অনেকটা কমে যায়।
এতে বলা হয়েছে, দীর্ঘকালীন অবসাদ হতে ডিমেনশিয়া কিংবা স্মৃতিনাশ হতে দেখা যায় মাঝে-মধ্যেই। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, অবসাদ বাড়তে থাকলে তার থেকে অ্যালঝাইমার্সের লক্ষণ দেখা দেওয়া অসম্ভব কিছুই নয়। বয়সজনিত কারণে যে সব সময়ই ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়, তা কিন্তু নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চেনা মুখ, নিজের জিনিস, সহজ কথাও মনে রাখতে না পারার নেপথ্যে রয়েছে অ্যালঝাইমার্স। অবসাদ যদি দীর্ঘমেয়াদে চলতেই থাকে ও সঠিক চিকিৎসা না হয়, তখন ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ বেড়েও যেতে পারে, যে কারণে মস্তিষ্কে প্রদাহও বাড়তে থাকে। তখন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও কমতে থাকে। গ্রিন টি এই প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে, সেইসঙ্গে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে দিতে পারে।
‘আমেরিকান ব্রেন ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, যদি দিনে কেও ৬০০ মিলিলিটার অর্থাৎ চার কাপের মতো গ্রিন টি খান, তাহলে তার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যাবে। গ্রিন টি’তে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। রয়েছে ‘ইজিসিজি’ নামে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষকরা জানিয়েছেন, চার কাপ না হলেও চিনি ছাড়া দিনে ৩ কাপের মতো গ্রিন টি খেলে উপকার হবে। তবে গ্রিন টি খালি পেটে খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। দু’টি মিলের মধ্যেই তা খেতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org