রক্তে কোলেস্টেরল ১০০০ মিলিগ্রামের বেশি হলে কী অবস্থার সৃষ্টি হয়?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেখা গেলো বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির হাতের তালু, তার পায়ের পাতা, মুখের ত্বকে হলদেটে বাদামি এক ধরনের ছোপ ধরছে। প্রথমে চর্মরোগ বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। পরে রক্ত পরীক্ষায় রিপোর্ট দেখে চোখ কপালে ওঠে যায় তাদের। কী রোগ হয়েছে তার?

শরীরে কোলেস্টরল কী বাড়ছে? কিন্তু কতোটা? এক ব্যক্তির রক্তে কোলেস্টেরল এতোটাই বেড়ে গিয়েছে যে, তার ভয়ঙ্কর প্রভাব দেখা দিতে শুরু করে চেহারায়। কোলেস্টেরলের ভারে একেবারে তছনছ হচ্ছে রক্তজালিকা। হলদেটে বাদামি এক ধরনের ছোপ ধরছে হাতে। শিরা-ধমনী ফুঁড়ে বের হচ্ছে হলদেটে মাংসপিণ্ড। ত্বকের স্বাভাবিক রং যেনো একেবারে ফিকে হতে বসেছে। বিরল এই ঘটনা ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাতে।

‘জামা কার্ডিয়োলজি’ বিজ্ঞান পত্রিকায় এই ঘটনার খবর প্রকাশ পেয়েছে। তাতে দেখা যায়, গত ৩ সপ্তাহ ধরে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তির হাতের তালু, পায়ের পাতা, মুখের ত্বকে হলদেটে বাদামি এক ধরনের ছোপ ধরছে। প্রথমে চর্মরোগ বলেই মনে করেন চিকিৎসকরা। পরে রক্ত পরীক্ষায় রিপোর্ট দেখে রীতিমতো চোখ কপালে ওঠে তাদের। চিকিৎসকরা দেখেন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১০০০ মিলিগ্রাম ছাপিয়ে গেছে! রক্তে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২০০ মিলিগ্রাম হওয়ার কথা ছিলো। তা যদি বেড়ে গিয়ে ২৪০ মিলিগ্রাম হয়েই যায়, তাহলেও বলা হয় যে, কোলেস্টেরল বাড়ছে। এমন অবস্থাতেও সতর্ক করেন চিকিৎসকরা। তবে ওই ব্যক্তির রক্তে কোলেস্টেরল যে হারে বেড়েই চলেছে, সেটি অস্বাভাবিক তো বটেই, বিরল ঘটনা বললেও হয়তো ভুল হবে না।

Related Post

গবেষকরা জানিয়ছেন যে, ওই ব্যক্তি ওজন কমিয়ে পেশিবহুল চেহারা বানাবেন বলে শাকসব্জি, ফলমূল, বাদাম খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে পুরোপুরি প্রাণিজ প্রোটিন খেতে শুরু করেছেন। এমন এক ধরনের কিটো ডায়েট তিনি করেছিলেন, যাতে কার্বোহাইড্রেট কখনও ছুঁয়েও দেখতেন না। প্রতিদিন পাতে থাকতো কেবলমাত্র মাছ, মাংস, ডিম, চিজ় এবং মাখন। প্রায় আড়াই কিলোগ্রাম চিজ়, চার কিলোগ্রামের বেশি মাখন কয়েক দিনের মধ্যে খেয়ে ফেলেছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে, বিভিন্ন ধরনের মাংস এবং মাছ তো সঙ্গে ছিলই। যে কারণে রক্তে এতোবেশি প্রোটিন এবং ফ্যাট জমা হতে শুরু করে যা রক্তজালিকাগুলোকে ছিঁড়েখুঁড়ে দেয়। যে কারণে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন বাধা প্রাপ্ত হয়। অতিরিক্ত ফ্যাট কিংবা স্নেহপদার্থ বেরিয়ে আসতে শুরু করে দেয় শরীরের বাইরে। যে রোগ ধরা পড়ে তার নাম হলো জ়্যানথেলাসমা।

সাধারণত শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল, অর্থাৎ ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ কিংবা এলডিএলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তে শুরু করলেই তখন এই রোগটি দেখা দেয়। এগুলো সবই হলো অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা জমতে জমতে মাংসপিণ্ডের মতো আকারও নেয়। সাধারণত এগুলো ক্ষতিকারক নয়, আবার ব্যথাও হয় না। অনেকের চোখের চারপাশে এমন হলদেটে মাংসপিণ্ডই দেখা দেয়। তবে ফ্লোরিডার ওই ব্যক্তির সারা শরীরে এমন মাংসপিণ্ড গজাতে শুরু করেছে যে, ধীরে ধীরে ত্বকের রংও বদলে যাচ্ছে।

এই ঘটনা সম্পর্কে হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকরা জানিয়েছেন যে, জ়্যানথেলাসমা মারাত্মক ধরনের আকার নিয়েছে ওই ব্যক্তির শরীরে। এমন চলতে থাকলে খুব দ্রুত কিডনিতে স্টোন হতে পারে বা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন ওই ব্যক্তি। আবার অস্টিয়োপোরেসিসে পঙ্গুও হয়ে যেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জানুয়ারী ২৯, ২০২৫ 1:01 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…

% দিন আগে

চিন্তা করেই লেখা যাচ্ছে কম্পিউটারে শব্দ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…

% দিন আগে