স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে এবার উৎপাদন হবে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সরঞ্জাম। আর এই চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন হবে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে কারখানার ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন ম্যাগাসান তুর্কির চেয়ারম্যান আরিফ সিলেকতিন।
তুরস্কের বিশ্বখ্যাত মেডিকেল গ্যাস পাইপলাইন ইকুইপমেন্ট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান মেগাসান তুর্কি ও মেগাসান বাংলাদেশের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ঈশ্বরদী পৌর শহরস্থ অরণকোলা এলাকায় ‘মেগাসান মেডিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ লিমিটেড অ্যাসেম্বলি প্লান্ট’ নামে এই কারখানা নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
মেগাসান মেডিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও প্রকৌশলী নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এবং পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও পাবনা জেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব মন্ডল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন, বিএনপি নেতা মাহাবুবুর রহমান পলাশ, সমাজসেবক মনা বিশ্বাস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলী এহসান প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঈশ্বরদীর সিনিয়র সাংবাদিক ববি সরদার।
অনুষ্ঠানে ম্যাগাসান তুর্কির চেয়ারম্যান আরিফ সিলেকতিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির কারখানার যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। এতে করে বাংলাদেশ এবং তুরস্কের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। আমাদের অ্যাসেম্বলি প্লান্টটি কেবল ইউরোপীয় উৎপাদন মান মেনেই চলবে না বরং পরিবেশগতভাবে সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিও গ্রহণ করবে ও একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনেও কাজ করবে। আন্তর্জাতিক মানের এই চিকিৎসা সরঞ্জাম দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। ইতিহাস জুড়েই তুরস্ক ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ। আমরা যৌথ প্রকল্প ও বিনিয়োগের মাধ্যমে এই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে চাই। তিনি এই বিষয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org