দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলচ্চিত্র আন্দোলন কর্মী, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং শিক্ষক জাহিদুর রহিম অঞ্জনকে নিয়ে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম। এই সংগঠনটিরই সাবেক সভাপতি ছিলেন অঞ্জন।
আগামীকাল ৭ মার্চ (শুক্রবার) বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে হবে এই স্মরণ অনুষ্ঠানটি। যেখানে শর্ট ফিল্ম ফোরামের সদস্য ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অঞ্জনের পরিবার, স্বজনসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মানুষরা।
শর্ট ফিল্ম ফোরাম হতে জানানো হয়, ৭ মার্চ (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় শুরু হবে স্মরণ সভা। ইফতারের পরই একই মিলনায়তনে দেখানো হবে অঞ্জনের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত এই চলচ্চিত্রটি কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোট গল্প ‘রেইনকোট’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে।
‘মেঘমল্লার’ পরিচালনার পাশাপাশি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও রচনা করেছেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। এই দুই বিভাগসহ সিনেমাটি মোট ৫টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে।
সরকারি অনুদানে সর্বশেষ তিনি নির্মাণ করেন ‘চাঁদের অমাবস্যা’। শুটিং সম্পন্ন করে গত বছরেই সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা থাকলেও দেশের সার্বিক অবস্থা ও নিজের অসুস্থতার কারণে মুক্তি দিতে পারেননি। তবে খুব শীঘ্রই সিনেমাটি দর্শকদের সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী ছিলেন। প্রকাশ করেছিলেন সিনেমার পোস্টার!
উল্লেখ্য, বহুদিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন অঞ্জন। বিগত কয়েক মাস ধরে ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন অঞ্জন। সর্বশেষ তিনি ভর্তি ছিলেন বেঙ্গালুরু স্পর্শ হাসপাতালে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ছিলেন লাইফ সাপোর্টেও। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের এই গুণী নির্মাতা। ২৬ ফেব্রুয়ারি তার মরদেহ দেশে নিয়ে আসা হলে এর পরেরদিন জাতীয় জাদুঘরের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আজিমপুর কবরস্থানে মায়ের কবরে সমাহিত করা হয় তাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org