দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পাকিস্তানের নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। তাহলে আসলেই পাকিস্তানের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে কি-না তা জানিয়েছে পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যম ডন।
গতকাল সোমবার (১০ মার্চ) ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার খবরে পাকিস্তান স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। অপরদিকে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানিদের উপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ভিসার জন্য আবেদন করার সময় তাদের আরও বেশি যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখিও হতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখ ডনকে বলেছেন, আমরা স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি, তবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যা কিছু বলা হচ্ছে তা শুধুই সংবাদ প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই। এখনও কিছুই আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। আমরা এখনও নিশ্চিতকরণের অপেক্ষায় রয়েছি।
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের প্রধান সংবাদপত্রগুলোতে নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয় যে, একটি খসড়া প্রস্তাবে কিছু দেশকে রেড লিস্টেও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে, সেসব দেশের নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ওই তালিকায় আগের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলোর পাশাপাশি আফগানিস্তানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। তবে পাকিস্তান এই তালিকায় রয়েছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ীদ জানা যায়, পাকিস্তানকে অরেঞ্জ ক্যাটাগরিতেও রাখা হতে পারে, যেখানে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ভিসার উপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হতে পারে। এই ক্যাটাগরিতে থাকা দেশগুলোর নাগরিকরা শুধুমাত্র ব্যবসায়িক ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন, তবে অভিবাসন কিংবা পর্যটন ভিসার জন্য নয়। তাছাড়াও, এই ভিসার মেয়াদ কমিয়েও দেওয়া হতে পারে ও আবেদনকারীদের ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারেও অংশ নিতে হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা কিছু পাকিস্তানি শিক্ষার্থীকে বলা হয়েছে যে, যেনো তারা দেশে ফিরে না আসে, কারণ তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও নিশ্চিত নয় যে, তাদের আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কি-না। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর) গত সপ্তাহে পাকিস্তানিসহ প্রায় এক ডজন দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভ্রমণ না করতে, অর্থাৎ যতোক্ষণ না প্রশাসন নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো এই নিষেধাজ্ঞার প্রথম খসড়া চূড়ান্ত করছে বলে জানা যায়। এতে অন্যান্য বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হচ্ছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের আঞ্চলিক ব্যুরো ও বিশ্বব্যাপী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোও তাদের মতামত দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র পাকিস্তানের এই সংবাদ মাধ্যম ডনকে নিশ্চিত করেছেন যে, ভিসা প্রোগ্রামগুলোর একটি ব্যাপক পর্যালোচনাও চলছে, যা আগামী সপ্তাহ হতেই কার্যকর হতে পারে। এই পদক্ষেপগুলো সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার ও অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলার জন্য চলমান উদ্যোগেরই অংশ।
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়াটি নিশ্চিত করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকি নয়। সব ভিসা আবেদনকারীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসিফায়েড ও আনক্লাসিফায়েড তথ্যের ভিত্তিতেই ব্যাপকভাবে যাচাইও করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org