দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে চাইলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া উপায়ও নেই। শরীর ডি-হাইড্রেটেড হয়ে গেলেই ঘটতে পারে বিপদ।
ঋতুর নাম বসন্ত হলেও, বাইরে বের হলেই বোঝা যাচ্ছে সূর্যের তাপে পুড়ছে পুরো শরীর। বসন্তের মৃদু বাতাসের বদলে গরম হাওয়ার আঁচ এসে লাগে চোখেমুখে। সেইসঙ্গে গরমে অস্বস্তি তো রয়েছেই। দরদর করে ঘাম ঝরছে কপাল বেয়ে। শহর হতে শহরতলির বর্তমান চিত্র এমনই। এই বছর গরম বাড়বে। আবহাওয়া দপ্তর আগাম সতর্কতা দিয়েও রেখেছে। দক্ষিণবঙ্গ-সহ বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস। চিকিৎসকরা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে চাইলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া উপায়ও নেই। শরীর ডি-হাইড্রেটেড হয়ে গেলেই ঘটবে বিপদ।
তেষ্টা না পেলেও কিছুক্ষণ অন্তর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কাজের চাপে, ব্যস্ততায় পানি খাওয়ার কথা মনে থাকে না অনেকের। তবে গরমে ফিট থাকতে হলে, ঘন ঘন পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। শুধু গরমকাল বলেই নয়, রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে হলে পানি খাওয়ার কোনও বিকল্পও নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা হতে অন্য কোনও রোগের ঝুঁকি, পানিতেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ থাকার রসদ। তবে সারা বছর প্রাপ্তবয়স্কদের তিন-সাড়ে তিন লিটার পানি খাওয়ার কথা বলা হয়।
গরমে সাময়িক স্বস্তি পেতে অনেকেই আখের রস, কোল্ড ড্রিংকসেও গলা ভেজাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তৃপ্তি দিলেও এই ধরনের পানীয় শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয় বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ। বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘কোল্ড ড্রিংক উল্টো শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে। রাস্তায় ঠেলাগাড়ির আখের রসে যে পানি ব্যবহার করা হয়, তা আদৌ কতোটা পরিষ্কার, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তবে আখ কিনে এনে চিবিয়ে খেতে পারলে সমস্যা নেই।’ তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org