দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে ওষুধ খাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায়ও থাকে না। তবে, আয়ুর্বেদের সাহায্য নিলে কষ্ট একটু কমতেও পারে।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে সাধের অনেক খাবারই জীবন থেকে বাদ দিতে হয়। এমনকি প্রতিদিনের ডাল খাওয়াতেও বিধি নিষেধ রয়েছে। এছাড়াও দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে ওষুধ খাওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায়ও থাকে না। তবে, আয়ুর্বেদের সাহায্য নিলে কষ্ট একটু কমতেও পারে।
দীর্ঘদিন ধরে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগলে তখন গাঁটে ব্যথা বাড়ে। ভুগতে হয় গাটের ব্যথায়। আবার অনেক সময় কিডনিতে পাথরও জমতে শুরু করে। তাই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে। এইসব আয়ুর্বেদিক ভেষজকে প্রতিদিনের সঙ্গী করে তুলুন।
হলুদ
হলুদের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানও রয়েছে। প্রতিদিনের ডায়েটে হলুদ রাখলে গাটের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। সেইসঙ্গে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসবে। প্রতিদিনের রান্নায় হলুদ ব্যবহারের পাশাপাশি হলুদের চা বানিয়ে খেতে পারেন।
নিম এবং তুলসীর রস
নিম এবং তুলসী দুই ভেষজ উপাদানই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যাকে দূর করতে পারে। নিম-তুলসীর রস খেলে তখন এটি দেহে জমে থাকা টক্সিন বের করে দেয়। অর্থাৎ দেহে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর হতে বের করে দেয়। সেইসঙ্গে লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। আবার শারীরিক প্রদাহও কমায়। এক মুঠো তুলসী পাতা ও নিম পাতা ধুয়ে থেঁতো করে নিন। এটি বের করে রস ছেঁকে নিন। এই মিশ্রণটি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খান। এ ছাড়াও এক কাপ পানিতে নিম এবং তুলসী পাতা ফুটিয়ে খেতে পারেন।
ত্রিফলা
আমলকি, হরিতকি এবং বহেরা- ৩ ফলের সংমিশ্রণই হলো ত্রিফলা। এই ত্রিফলা চূর্ণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায়। আবার শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়। ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগলে ত্রিফলার চা’ও খেতে পারেন। এক চামচ ত্রিফলা চূর্ণ এক কাপ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরেরদিন সকালে খালি পেটে পান করুন এই পানীয়টি। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org