দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেটের মেদ ঝরিয়ে ক্ষীণকটি হতে চাইছেন? তাহলে কী করবেন? সেই চিন্তা হয়তো আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। না চিন্তার কিছু নেই। কিছু নিয়ম মানলে এই সমস্যার সমাধান পেতে পারেন অনায়াসে। কী সেই সমাধান?
হয়তো আপনার পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক সব বৃথা গেছে। কিছুতেই পেট ও কোমরের দু’পাশে জমে থাকা বাড়তি কয়েক কিলো মেদ থেকে আপনি নিস্তার পাচ্ছেন না। এর নেপথ্য কারণ হতে পারে ‘ডাবল কার্বিং’।
রোগা হওয়ার জন্য কতো কী-ই না আপনি করছেন! ভাজাভুজি খাওয়া বাদ দিয়েছেন, লিফ্টের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে নামা ওঠা করছেন। নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করছেন, তারপরও কিছুতেই যেনো পেট ও কোমরের দু’পাশে জমে থাকা বাড়তি কয়েক কিলো মেদ থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না! পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক সবই বৃথা গেলো। তাহলে কোথায় সমস্যা! ফিটনেস ও যাপন প্রশিক্ষক ইম্যানুয়েল ডিকারসন জুনিয়র বলেছেন যে, সমস্যাটা আপনার খাওয়া-দাওয়ারও হতে পারে। যারা রোগা হওয়ার সফরের শেষ প্রান্তে পৌঁছেও শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং লাইন পেরোতেই পারছেন না, তাদের জন্য ইম্যানুয়েলের পরামর্শ একসঙ্গে দু’রকম কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এই ধরনের খাওয়ার একটি নামও দিয়েছেন ওই যাপন প্রশিক্ষক- ‘ডাবল কার্বিং’।
ডাবল কার্বিং তাহলে কী?
একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে ইম্যানুয়েল বলেছেন, ‘‘আপনি নিশ্চয়ই মডেলদের মতো পেটানো চেহারা পেতে চান? তাহলে প্রথমেই দু’রকম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একসঙ্গে খাওয়া বন্ধ করুন। প্রতি বার খাওয়ার সময় কেবলমাত্র একটিই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন। ধরুন বার্গার খাচ্ছেন, কিন্তু তারসঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ় খাবেন না। কারণ হলো বার্গারের পাউরুটিতে কার্ব থাকছে আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ়েও সেটি থাকছে। এর পরিবর্তে বার্গারের সঙ্গে হালকা করে প্যানে ভেজে নেওয়া সব্জিও খেতে পারেন। আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ় খেলে পাউরুটি দু’টো বাদও দিতে পারেন।’’
দু’রকম কার্বোহাইড্রেট খাওয়া হয়?
ইম্যানুয়েল আসলে যে ধরনের খাদ্যাভ্যাসের কথা বলছেন, তা ভারতীয়, এমনকি, বাঙালিদের মধ্যেও চালু রয়েছে। অনেকেই ভাতের সঙ্গে আলু ভাতে, আলুর তরকারিও খেয়ে থাকেন। বিরিয়ানি থেকে ঝালমুড়ি- সবেতেই দু’রকমের কার্বোহাইড্রেট থাকে বিদ্যমান। বিরিয়ানিতে চাল-আলু, ঝালমুড়িতে মুড়ি ও আলু, এমনকি, বাঙালির প্রিয় খাসির মাংস ও ভাতেও আলু থাকাটা জরুরি। এ ছাড়াও রয়েছে লুচি-আলুরদম, মোগলাই পরোটার সঙ্গেও আলুর তরকারি, আলুর পরোটা, শিঙাড়ার সঙ্গে মিষ্টি চাটনি খেলে তিন রকম শর্করাও খাওয়া হয়। ভারতীয়দের অনেকেই ভাত-রুটি একসঙ্গেই খান। আবার খিচুড়ির সঙ্গেও খাওয়া হয় আলুরদম, আলুভাজা কিংবা আলুর চপ। আবার দোসার ভিতরেও থাকে আলুর পুর। অপরদিকে ইতালিয়ান খাবারে পাস্তার সঙ্গে পরিবেশন করা হয় গার্লিক ব্রেড। এই সবই কিন্তু ‘ডাবল কার্বিং’। যা মেদ ঝরানোর গোপন শত্রু, বলছেন এই ফিটনেস প্রশিক্ষক।
‘ডাবল কার্বিং তত্ত্ব’ কী ঠিক?
ইম্যানুয়েলের সঙ্গে একমত পোষণ করেন পুষ্টিবিদ উমঙ্গ মলহোত্র। তিনি বলেছেন, ‘‘আসলে প্রত্যেক বার খাবার খাওয়ার সময় আমাদের শরীরে পুষ্টি যাওয়ারই কথা। তবে খাবার যদি শর্করায় ভারাক্রান্ত হয় তবে পুষ্টির পরিমাণও কমছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা। যা দ্রুতই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ওজন ঝরানোর সফরে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর বটে।’’ এই পুষ্টিবিদের মতে, রক্তে শর্করা হঠাৎ বাড়লে সেটি থেকে উল্টাপাল্টা খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগতেই পারে, তা থেকে মেদও জমতে পারে, তাতে ওজন ঝরানোর যাবতীয় চেষ্টা ও তার জন্য করা পরিশ্রমের বারোটা বাজবেই।
তাহলে করণীয় কী?
পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, একটি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রেখে তারসঙ্গে খাওয়া বাকি খাবারগুলোকে প্রোটিনজাতীয় খাবারে বদলে নিন। ভাতের সঙ্গে আলু ছাড়া সব্জি বা পনির কিংবা টোফু অথবা চিকেন রাখুন। লুচি-পরোটার সঙ্গে আলুর দমের পরিবর্তে নিন ডাল কিংবা কম শর্করা বিশিষ্ট আনাজের তরকারি। এই সামান্য বদলের কারণে শরীরে যাওয়া শর্করার মাত্রাই শুধু কমবে না, শরীরে পুষ্টিও অনেকটা বেশি যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org