দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একজন রোগী জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে মোজা পরার পর তার গন্ধ শোঁকার অভ্যাস হয়ে যায়। মোজা পরীক্ষা করার পর সেগুলোতে ছত্রাকের উপস্থিতি খুঁজে পান চিকিৎসকরা। সেই একই ছত্রাক তরুণের ফুসফুসে সংক্রমণের জন্যও দায়ী।
ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন ওই তরুণ। সাধারণ ওষুধেও সারছে না দেখে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়েছিলেন এক তরুণ। পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর ফুসফুসে মারাত্মক ছত্রাক সংক্রমণ ধরা পড়ে ওই যুবকের। সেই সংক্রমণের উৎস খুঁজতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে যায় চিকিৎসকদের। চিকিৎসকরা জানতে পারেন, প্রতিদিন নোংরা মোজা শোঁকার অভ্যাস ছিল তার। রোগী নিজেই জানিয়েছেন যে, দীর্ঘ সময় ধরে মোজা পরার পর তার গন্ধ শোঁকার নেশা হয় তার। মোজা পরীক্ষা করে সেগুলোতেও একই ধরনের ছত্রাকের উপস্থিতি দেখতে পান চিকিৎসকরা। সেই একই ছত্রাক তরুণের ফুসফুসে সংক্রমণের জন্যও দায়ী বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এমন একটি ঘটনাটি ঘটেছে চীনের চংকিঙে। দীর্ঘদিন যাবত কাশিতে ভুগছিলেন ওই তরুণ। দোকান থেকে সাধারণ কাশির ওষুধে উপসর্গ কমছে না দেখে তিনি চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন। চিকিৎসক স্ক্যান করে তার ফুসফুসে গুরুতর সংক্রমণের সন্ধান পেয়েছেন। পরে তার শ্বাসনালী হতে নমুনা সংগ্রহের জন্য ব্রঙ্কোস্কোপি করা হয়।
পরীক্ষায় ধরা পড়ে যে, ওই তরুণের অ্যাসপারজিলোসিস হয়েছে। এই রোগটি অ্যাসপারজিলাস ছত্রাকের কারণে সৃষ্ট ফুসফুসের রোগ। উষ্ণ অথচ স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বৃদ্ধি পায় এই ছত্রাকটি।
সেনা মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির সাউথওয়েস্ট হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক লুও হু স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান যে, উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ পরার কারণে ওই ব্যক্তির মোজা ছত্রাকের জন্য আদর্শ প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে উঠে। সময়মতো চিকিৎসা শুরু হওয়ায় তরুণের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়নি বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চীনে এই ধরনের কোনো ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ২০১৮ সালে ঝাংঝোর এক ব্যক্তি মোজার গন্ধে আসক্তি তৈরি করার পর তার ফুসফুসে ছত্রাকের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org