দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের জীবনের চিরন্তন এক সত্য হলো মৃত্যু। মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মানুষের শরীরে কী কী পরিবর্তন ঘটে, তা জানতে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের গবেষণা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিল, কেন্টাকির একদল স্নায়ুবিজ্ঞানী মৃত্যুর সময় মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপগুলো প্রথমবারের মতো ধারণ করতে সক্ষম হন। যে কারণে মানুষের মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে আসলে কী ঘটে, তা নিয়ে কিছু তথ্যও জানা গেছে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে মস্তিষ্কে পুরো জীবনের নানা দৃশ্য সিনেমার ট্রেলারের মতোই একঝলক দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৮৭ বছর বয়সী এক মৃগীরোগী চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার মৃত্যুর ঠিক আগমুহূর্তে অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের স্পন্দন বন্ধ হওয়ার পূর্বে এবং পরের ৩০ সেকেন্ডের মস্তিষ্কের কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য চিকিৎসকরা তার মাথায় ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) যন্ত্র যুক্ত করেছিলেন। এই সময় মোট ৯০০ সেকেন্ড সময়ের মস্তিষ্কের তরঙ্গের দৈর্ঘ্য ধারণ করা হয়। মস্তিষ্কের তরঙ্গের রেকর্ড হতে দেখা যায়, মস্তিষ্কের স্মৃতি এবং স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সঙ্গে জড়িত ক্ষেত্রসমূহ মৃত্যুর কিছু পরও সক্রিয় ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লুইসভিল, কেন্টাকির স্নায়ুবিজ্ঞানী আজমল জেম্মার জানিয়েছেন যে, আমাদের মস্তিষ্ক মৃত্যুর ঠিক পূর্বে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো শেষবারের মতো স্মরণ করতে পারে, যা মৃত্যুর কাছাকাছি যাওয়া অনেক ব্যক্তির অভিজ্ঞতাতেও বলা হয়েছে। নতুন ফলাফল আসলে ঠিক কখন জীবন শেষ হয়, সেই সম্পর্কে আমাদের ধারণাকেও চ্যালেঞ্জ করে। এই গবেষণার ফলাফল ফ্রন্টিয়ার্স ইন এজিং নিউরোসায়েন্স জার্নালেও প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, মস্তিষ্ক জৈবিকভাবেই মৃত্যুর জন্য নিজে থেকেই প্রোগ্রাম করে হয়তো। মৃত্যুর সময় হুট করে বন্ধ না হয়ে ধীরে শারীরবৃত্তীয় এবং স্নায়ুবিক একটি পরিবর্তনও উপস্থাপন করে। সম্ভবত মৃত্যুর পূর্বে শেষ সেকেন্ডে জীবনের একটি ভাষ্য রিপ্লে দেখায় তার মস্তিষ্ক। বিজ্ঞানীরা যদিও এখনও নিশ্চিত নন যে, কীভাবে এবং কেনো এমন পর্যালোচনামূলক ঘটনা মস্তিষ্কে ঘটে থাকে। তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org