কেনো পুরুষের চেয়ে নারীর মস্তিষ্ক ছোট হয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানব মস্তিষ্ক এক জটিল বিষয়। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন পুরুষের প্রায় ১৫০০ সিসি এবং নারীদের প্রায় ১৩০০ সিসি হয়ে থাকে।

কেমব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমআরআইয়ের মতো পরীক্ষা ব্যবহার করে নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের আকার তুলনা করেছেন। তারা দেখেছেন যে, পুরুষদের মস্তিষ্ক নারীদের তুলনায় ৮-১৩ শতাংশ বেশি থাকে।

নারীদের মস্তিষ্ক ছোট হওয়ার কারণ কী?

Related Post

গবেষণায় দেখা যায়, নারী এবং পুরুষের মস্তিষ্কের আকারের পার্থক্য শারীরিক গঠনের কারণে হয়ে থাকে। সাধারণভাবে পুরুষের উচ্চতা নারীর তুলনায় বেশি হয়ে থাকে, যে কারণে তাদের মস্তিষ্কের আকারও এতে প্রভাবিত হয়। তবে নারীদের মস্তিষ্ক ছোট হলেও গবেষণায় দেখা যায় যে, তাদের ইনসুলার কর্টেক্স পুরুষদের তুলনায় বেশ বড়। মস্তিষ্কের এই অংশই আবেগ, দৃষ্টিভঙ্গি, যুক্তি এবং আত্ম-সচেতনতার সঙ্গে জড়িত। এটিও নারীদের বেশি আবেগপ্রবণ হওয়ার পেছনে কারণ হতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

গোনার ক্ষমতা, ভাষা শিক্ষা, লেখাপড়া শেখার ক্ষেত্রে বাম গোলার্ধের বেশি ভূমিকায় থাকে। অপরদিকে চারুকলা, সংগীত, কল্পনা প্রবণতা এইগুলো মূলত ডান গোলার্ধের কাজ। দেখা গেছে, পুরুষদের মস্তিষ্কে স্নায়ুকোষের সংখ্যা নারীদের চেয়ে ৭ গুণ বেশি। সেজন্য পুরুষরা যে কোনো সিদ্ধান্ত দ্রুতই নিতে পারেন।

অপরদিকে নারীদের আবার স্নায়ুসংযোগকারী নার্ভ পুরুষদের তুলনায় ১০ গুণ বেশি থাকে। তাই তাদের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা ও বাক্‌শক্তি অনেক বেশিই থাকে। সেজন্য যুক্তিতর্কে নারীদের হারানো বেশ শক্ত।

তাছাড়াও সিংগুলেট গাইরাস অংশ বড় হওয়ার কারণে নারীরা খুব দ্রুতই ও সঠিকভাবে স্মৃতি রোমন্থনও করতে পারেন, যা সাধারণত পুরুষরা পারেন না। তবে পুরুষদের মস্তিষ্ক অনেক কাজে মেয়েদের চেয়েও বেশি দক্ষ। যেমন স্থাপত্যবিদ্যা, গাণিতিক সংখ্যাতত্ত্ব, ক্রীড়াবিদ্যা ও মাপজোখের কাজের কথা বলা হয়ে থাকে।

তবে গবেষণায় জানা যায়, পুরুষরা কাজকর্ম করার ক্ষেত্রে ডান বা বাঁ যে কোনো একটি মস্তিষ্কের ওপরই নির্ভরশীল থাকেন বেশি। অপরদিকে নারীরা ব্রেনের দু’টি অংশেরই সমানভাবে ব্যবহার করে থাকে। সেই কারণে পুরুষদের তুলনায় মেয়েরা কাজকর্ম অনেক গুছিয়ে করতে পারেন।

কিন্তু কিছু স্ত্রী হরমোন যেমন- ইস্ট্রোজেনের প্রভাবে নারীরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হন পুরুষদের থেকে। সেজন্য নরীদের মধ্যে অবসাদে ভোগার প্রবণতাও বেশি থাকে। অপরদিকে পুরুষদের মধ্যে অটিজম, সিজোফ্রেনিয়ার মতো রোগ অনেক বেশি দেখা যায়। আবার ক্রনিক কিংবা দীর্ঘদিনের ব্যথা যা অনেকটা মস্তিষ্কের ওপরে প্রভাব ফেলে, যেটি মেয়েদের বেশিই হয়।

অতএব দেখা যাচ্ছে যে, শারীরিকভাবে পুরুষ এবং নারীদের মস্তিষ্কের গঠন ও কাজের কিছু পার্থক্যও রয়েছে। তথ্যসূত্র : প্রেসওয়্যার ১৮

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মে ১২, ২০২৫ 5:34 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…

% দিন আগে

চিন্তা করেই লেখা যাচ্ছে কম্পিউটারে শব্দ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…

% দিন আগে