দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন মা। সেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন তারই বাবা। সেই ঘটনার জন্য বাবাকেই দোষী সাব্যস্ত করে বিপুল পরিমাণ জরিমানার আদেশ দিলো মুম্বইয়ের মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ট্রাইব্যুনাল।

সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে, এই জরিমানার অঙ্ক তুলে দিতে হবে তারই ৮ বছরের মেয়ের হাতে। ২০২১ সালের এই দুর্ঘটনা মামলাটির নিষ্পত্তি করে সম্প্রতি আদালত এই রায় দিয়েছে বলে খবর বেরিয়েছে। ভারতের মহারাষ্ট্রের ঠাণের বাসিন্দা ওই নাবালিকার হাতে প্রায় সাড়ে ৩২ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তরুণী মারা যাওয়ার পর তার মা মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামাই, গাড়ির মালিক, চালক ও তার বিমা সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, ওই পরিবারটি ২০২১ সালে নানদেড় থেকে উমরখেড় যাচ্ছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন বালিকার বাবা। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা খায়। যে কারণে মেয়েটির মা গুরুতর আহত হন। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। মৃত তরুণী পেশায় একজন নার্স ছিলেন। শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল গাড়ি চালানোর সময় অভিযুক্তের অবহেলার কথাও উল্লেখ করেন। দুর্ঘটনার জন্য ওই বালিকার বাবাকেই দায়ী করে আদালত।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালত মোট ৬৪ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। বিমা সংস্থা এই আবেদনের বিরোধিতা করে জানায় যে, তাদের সংস্থা থেকে বিমা করানো গাড়িটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে অন্য এক গাড়ি। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল বিমা সংস্থার যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে।
যেহেতু এই দুর্ঘটনার জন্য নাবালিকার বাবাকেও দোষী করা হয় তাই আদালতের রায়ে বলা হয়, ক্ষতিপূরণের ৫০ শতাংশ তিনিই বহন করবেন। মামলার আবেদন করার পর থেকে আদায় না হওয়া পর্যন্ত ৮ শতাংশ বার্ষিক সুদসহ ৩২.৪১ লক্ষ টাকা দিতে হবে ওই নাবালিকার বাবাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org