দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ ফাস্ট ফুডের বিজ্ঞাপন, ভিডিওই বাড়াচ্ছে কম বয়সিদের মধ্যে ওবেসিটি। এমনটিই দাবি করেছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।

জাঙ্ক ফুডের রমরমা সর্বত্রই। ফুড ব্লগারদের জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ভিডিও, বিভিন্ন ফাস্ট ফুড প্রস্তুতকারীর বিজ্ঞাপনে ভরে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এই ফাস্ট ফুডের বিজ্ঞাপন-ভিডিওই বাড়াচ্ছে কম বয়সিদের মধ্যে ওবেসিটি। এমনটিই দাবি জানিয়েছেন ব্রিটেনের গবেষকরা।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ৭ থেকে ১৫ বছর বয়সি বাচ্চারা মাত্র ৫ মিনিট যদি জাঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপনও দেখে, তাতেই তারা দিনে অতিরিক্ত অন্তত ১৩০ ক্যালোরি গ্রহণ করে। এই ক্যালোরি দিনে অন্তত দু’টা পাউরুটি খাওয়ার সমান।
এইটুকু পড়ে অনেকের মনে হতে পারে, শুধুমাত্র জাঙ্ক ফুডের ভিডিও-বিজ্ঞাপন দেখে কীভাবে ওজন বাড়তে পারে। বিশ্বজুড়ে ফুড মার্কেটিং মানুষের জীবনযাপনের উপরেও প্রভাব ফেলছে। ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ লিভারপুলে করা এই গবেষণা বলছে যে, জ়াঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপন, ছবি, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, বাচ্চাদের মধ্যে এই ধরনের খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও তৈরি করে।
সাধারণত লোভনীয় খাবারের ছবি, ভিডিও দেখলে তা খেতেও ইচ্ছে করবে। তাই সেগুলো দেখে বাচ্চারা বায়না ধরে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার জন্য। অভিভাবকরাও তা কিনে দেন। তাছাড়াও আজকাল ফুড অ্যাপের মাধ্যমে খুব সহজেই অর্ডার করা যায় এই ধরনের খাবার। এতেই ওবেসিটির শিকার হয়ে যাচ্ছে বাচ্চারা।
ওই গবেষণায় দেখা যায়, জাঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপন দেখার কারণে, বাচ্চারা স্ন্যাকসে ৫৮ ক্যালোরি এবং লাঞ্চে ৭২ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করছে। মোটের উপর অতিরিক্ত ১৩০ ক্যালোরি গ্রহণও করছে বাচ্চারা। এই গবেষণা ব্রিটেনের বাচ্চাদের উপর করা হলেও এই সমস্যা সর্বত্রই বিদ্যমান।
দিন দিন বেড়ে চলেছে চাইল্ড ওবেসিটি। ‘মডার্ন এপিডেমিক’-এ দাঁড়িয়েছে এই সমস্যাটি। চিকিৎসকদের মতে, ক্যালোরি গ্রহণ করলেও আজকাল তা কেও খরচ করে না। এখানে ওবেসিটিই বাড়ে। খেলাধুলা, শরীরচর্চার মাধ্যমে যদি ক্যালোরি খরচ করেও ফেলা যায়, তাহলে ওবেসিটির ঝুঁকিও কম।
শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরি বলেছেন, ‘৯২-৯৫% ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাচ্চারা ‘এক্সোজেনাস ওবেসিটি’তে ভুগছেন। অত্যাধিক পরিমাণে খাবার খাওয়া ও ফিজ়িক্য়াল অ্যাক্টিভিটি না-করার কারণে দেহের ওজনও বাড়তে থাকছে’। অতএব, ওবেসিটি এড়াতে হলে বাচ্চাদের ফিজ়িক্য়াল অ্যাক্টিভিটি বাড়াতে হবে ও জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা অবশ্যই কমাতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org