দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আজকাল বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তাহলে কোন কোন বীজ খাবেন, সেটি আজ জেনে রাখুন।
সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন ঠিকমতো পেট পরিষ্কার হওয়াটা দরকার। খাবার ঠিকমতো হজম হলে প্রতিদিনই শরীর থেকে সমস্ত বর্জ্য বেরিয়ে যাবে। আর যখনই পেট সাফ হবে না, তখন রোগের উপদ্রব বাড়বে। চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন যে, অন্ত্র হলো শরীরের দ্বিতীয় মস্তিষ্ক। তাই অন্ত্রের খেয়াল রাখতে হলে একটু বেশি ডায়েট নিয়ে সচেতনও থাকতে হবে। আজকাল অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বীজ খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। ফ্ল্যাক্স সিডস থেকে শুরু করে কুমড়ার বীজ, নানা ধরনের বীজ বাজারে পাওয়া যায়। প্রতিটি বীজের উপকারিতা আলাদা। তবে আলোচনা যখন অন্ত্রের স্বাস্থ্য নিয়েই হচ্ছে, তাহলে কোন কোন বীজ অবশ্যই আপনাকে খেতে হবে?
হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্ট সৌরভ শেঠি তার ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন যে, অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য তিনি প্রতিদিন ২ ধরনের সিডস খেয়ে থাকেন। সেগুলো এক চামচ করে আগের দিন রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই খান। এই দুই বীজ হলো চিয়া সিডস এবং সবজা সিডস। সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখেই এই বীজ খাওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন ডাঃ শেঠি।
চিয়া সিডসের গুণাগুণ
ডাঃ শেঠি জানিয়েছেন যে, চিয়া সিডস পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এটি জেলে পরিণত হয়। এই বীজ প্রায় ১২ গুণ বেশি পানি শোষণ করে। এতে বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিকঠাক হয় ও হজমজনিত সমস্যাও কমে যায়। অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস-অম্বল, বদহজমের সমস্যায় ভুগলে চিয়া সিডস ডায়েটেও রাখতে পারেন। তবে চিয়া সিডস খাওয়ার পর অন্তত এক গ্লাস পানি খাওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় চিয়া সিডস খেয়ে বদহজমও হতে পারে।
সবজা সিডসের উপকারিতা
সবজা কিংবা বাসিল সিডস হলো তুলসীর দানা। এই বীজের মধ্যে কুলিং এজেন্টও রয়েছে। সবজা বীজ ভেজানো পানি খেলে শরীর ঠাণ্ডা এবং হাইড্রেটেড থাকে। ডাঃ শেঠি জানিয়েছেন যে, এই বীজের মধ্যে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার। এটি পেট ফাঁপার সমস্যা দূর করে ও অন্ত্রে অণুজীবের ভারসাম্যও বজায় রাখে, যা পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বৃদ্ধি করে। তবে এক চামচের বেশি এই দুই বীজ কখনও খাবেন না বলে সতর্ক করেছেন তিনি। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org