দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অন্তত ৩টি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যার মধ্যে সবচেয়ে সুরক্ষিত ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে ৬টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয় বলে জানান তিনি। রবিবার (২২ জুন) টাইমস অব ইসরায়েল এক প্রতিবেদনে ফক্স নিউজের উপস্থাপক শন হ্যানিটির বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ফক্স নিউজের জনপ্রিয় উপস্থাপক হ্যানিটি জানিয়েছেন, সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার ফোনে আলাপ হয়। সেখানেই ট্রাম্প তাকে জানান যে, ইরানের পাহাড়ের নিচে অবস্থিত গোপন ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ফেলেছে। তিনি আরও জানান, যদিও পূর্ব ধারণা ছিল মাত্র দু’টি বোমাই যথেষ্ট হবে, বাস্তবে টার্গেট সম্পূর্ণ ধ্বংসে ৬টি বোমা প্রয়োজন হয়েছে।
হ্যানিটির ভাষ্য অনুযায়ী জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন থেকে নাতাঞ্জ এবং ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর দিকে অন্তত ৩০টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। সাবমেরিনগুলো ইরানের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে অবস্থান করছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর পূর্বেই ইসরায়েল দাবি করেছিল যে, ১৩ জুন তাদের চালানো প্রথম দফার হামলায় নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দু’টি কেন্দ্র- ফোর্দো এবং নাতাঞ্জ- দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র হিসেবেও বিবেচিত হয়ে আসছে।
মূলত বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হলো এক ধরনের অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র, যা মূলত মাটির গভীরে কিংবা পাহাড়ের নিচে নির্মিত কংক্রিটের সুরক্ষিত স্থাপনা ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই অস্ত্র মূলত সামরিক ঘাঁটি, গোপন গবেষণাগার বা পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর পূর্বে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, হামলার বিষয়ে জাতির উদ্দেশেও ভাষণ দেবেন তিনি। একইসঙ্গে বলা হয়, হামলার পূর্বে ইরানের পারমাণবিক উপকরণ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল- দুই দেশই বহু বছর ধরে দাবি করে আসছে যে, ইরানের এইসব পারমাণবিক কেন্দ্র দেশটির সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিরই ভিত্তি। সম্প্রতি ওইসব কেন্দ্র লক্ষ্য করেই একাধিক হামলা চালানো হয়, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। পুরো বিশ্বজুড়ে যেনো এক যুদ্ধের দামামা শুরু হয়েছে। যা কারও কাছেই কাম্য নয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org