দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ‘গডফাদার’ নামে এক ভয়ংকর ম্যালওয়্যার।

এই ম্যালওয়্যারটি স্মার্টফোনে নিজস্ব ভার্চ্যুয়াল পরিবেশ তৈরির পর ভুয়া ব্যাংকিং অ্যাপ চালু করে ব্যবহারকারীদের আর্থিক সব তথ্য চুরি করছে বলে জানা গেছে। ম্যালওয়্যারটি ভুয়া অ্যাপ তৈরির কাজ এতোটাই নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করছে যে, ব্যবহারকারীরা কোনো অবস্থাতেই বুঝতে পারেন না তিনি প্রকৃত অ্যাপের ভার্চ্যুয়াল সংস্করণটি ব্যবহার করছেন।
এই বিষয়ে গবেষণা সংস্থা জিমপেরিয়াম জানিয়েছে, গডফাদার ম্যালওয়্যারের নতুন এই সংস্করণে ব্যবহৃত হয়েছে ওপেন সোর্স প্রযুক্তি যেমন- ‘ভার্চ্যুয়াল অ্যাপ’ এবং ‘এক্সপোজড ফ্রেমওয়ার্ক’। যখন ব্যবহারকারী কোনো ব্যাংকিং অ্যাপ চালু করেন, তখন গডফাদার ম্যালওয়্যার সেই অ্যাপের প্রতিলিপি তৈরি করার মাধ্যমে সেটিকে একটি ছদ্ম কার্যক্রমের (স্টাবঅ্যাকটিভিটি) মাধ্যমে চালু করে। অর্থাৎ এই অ্যাপটিতে আসল অ্যাপের মতো ইন্টারফেস দেখা গেলেও পেছনে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ম্যালওয়্যার। যে কারণে অ্যাপটির লগইন তথ্য, পাসওয়ার্ড এবং পিন খুব সহজেই সংগ্রহ করে নেয় গডফাদার।
জিমপেরিয়ামের তথ্যমতে জানা যায়, গডফাদার ম্যালওয়্যারটি তথ্য চুরি করেই থেমে থাকে না, ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়াই অনলাইন লেনদেনও সম্পন্ন করতে পারে এটি। ম্যালওয়্যারটি ভুয়া লক স্ক্রিন কিংবা ‘অ্যাপ আপডেট হচ্ছে’ বার্তা দেখিয়ে ব্যবহারকারীকে বিভ্রান্ত করে ও হ্যাকারদের কমান্ড অনুযায়ী নির্দিষ্ট ঠিকানায় সেই অর্থ পাঠিয়ে দেয়।
এই গডফাদার ম্যালওয়্যারটি প্রথম শনাক্ত হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। শুরুতেই এটি বিভিন্ন ব্যাংক এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাপে এইচটিএমএল ভিত্তিক ভুয়া লগইন স্ক্রিন দেখিয়ে তথ্য হাতিয়ে নিতো। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান গ্রুপ আইবি বিশ্লেষণ করে জানায় যে, তৎকালীন গডফাদার সংস্করণ ১৬টি দেশে ৪০০টি অ্যাপকে টার্গেট করে। তবে ম্যালওয়্যারটির নতুন সংস্করণ আরও বেশ উন্নত। এতে ভার্চ্যুয়ালাইজেশন প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে অ্যাপের প্রকৃত কার্যক্রম হুবহু অনুকরণ করেও ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভবপর হচ্ছে। তথ্যসূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org