দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই দাঁতের যত্ন নিতে ভুলে যান। যে কারণে বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে এক সময় সমস্ত দাঁত পড়ে যেতে পারে।
আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর ২০২০ সালের তথ্য বলছে যে, ৬৫ হতে ৭৪ বছর বয়সের মধ্যে ১১ শতাংশ মানুষের সব দাঁতই পড়ে যায়। তাই দন্ত্যচিকিৎসকদের মতে, সময় থাকতে সাবধান হওয়া দরকার ও মুখের স্বাস্থ্যের যত্নও নেওয়া উচিত।
মাড়ির যত্ন
এক সমীক্ষা বলছে, ৬৫ বছরের পর তিন জন মানুষের মধ্যে অন্তত একজন মাড়ির কোনও না কোনও সমস্যায় ভোগেন। কারও দাঁত অক্ষত থাকলেও মাড়ির সমস্যার কারণে বয়সকালে খাবার চিবোতে বাধা দেয়। যে কারণে অনেকেই শক্ত খাবার এড়িয়ে চলেন, যা পরোক্ষভাবে শরীরে পুষ্টির অভাব সৃষ্টি করে। মাড়ি ফুলে গেলে তা থেকে প্রদাহও তৈরি হতে পারে। যদি কখনও দাঁত মাজতে গিয়ে মাড়ি থেকে রক্তপাত হয় কিংবা মাড়িতে ব্যথা হয়, তাহলে দন্ত্যচিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।
ড্রাই মাউথ
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মুখে লালা তৈরির পরিমাণও কমে আসে। এরফলে মুখের ভিতরের অংশ তখন শুকিয়ে যায়। তবে লালা মুখের ভিতরের অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে দাঁতের এনামেল সুরক্ষিত রাখতেও সাহায্য করে। অনেক সময় রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসুখের ওষুধ থেকে ড্রাই মাউথ হতে পারে। সমস্যা হতে বাঁচতে, দিনে পর্যাপ্ত পরিামাণে পানি খাওয়া উচিত। কোনও খাবার খাওয়ার পরই কুলকুচি করতে হবে। সেইসঙ্গে, নিয়মিত ফ্লুয়োরাইড জাতীয় টুথপেস্ট ও কোনও ভালো মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে।
চিকিৎসকের ভূমিকা
বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, দাঁতের ক্ষেত্রে অনেকেই শেষ মুহূর্তে এসে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিয়মিত দন্ত্যচিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শও করা উচিত। যে কারণে সমস্যা দ্রুতই শনাক্ত করা সম্ভব।
খরচসাপেক্ষ
দাঁতের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অনেকেই সেজন্য চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিলেও চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে করেন না। সঠিক সময় সমস্যা শনাক্ত না হলে, খরচ ও সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই বয়সের সঙ্গে দাঁতের চিকিৎসার জন্য বীমা করিয়ে রাখাও যেতে পারে। সেইসঙ্গে, নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করলে চিকিৎসার খরচ অনুয়ায়ী পরিকল্পনাও করা যেতে পারে।
বদভ্যাস ত্যাগ
দাঁতের ক্ষতির ক্ষেত্রে ধূমপান, কফি, গুটখা কিংবা খৈনির মতো জিনিসগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে। তাই সময় থাকতে এই ধরনের অভ্যাসগুলো অবশ্যই ত্যাগ করতে পারলে সার্বিকভাবে মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org