দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশুর জন্মের পর ওজন কম থাকলে বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। অন্ত্রের এক জটিল রোগে ভুগতে পারে নবজাতক শিশু।
সাধারণ মায়ের গর্ভে থাকার সময়ই হতে পারে সংক্রমণ। শিশু যদি সময়ের পূর্বেই ভূমিষ্ঠ হয়, তাহলে অন্ত্রের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও থেকে যায়। ভারতে ২ থেকে ৭ শতাংশ শিশুর এই রোগ হয়ে থাকে। জন্মের পর পরই কিংবা ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে তা ধরা পড়ে। সদ্যোজাত শিশুর তখন জটিল অস্ত্রোপচার করতে হয়।
এই রোগটির নাম নেক্রোটাইজ়িং এন্টারোকোলাইটিস। জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হলে এই রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অপরিণত এবং কম ওজনের শিশুদের এই রোগটি হয়ে থাকে। ‘জামা’ মেডিক্যাল জার্নালে এই বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, শিশু দেড় কিলোগ্রামের কম ওজন নিয়ে জন্মালে এই রোগটি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তাহলে কী এই রোগ?
নেক্রোটাইজ়িং এন্টারোকোলাইটিস মূলত অন্ত্রের অসুখ। এই রোগ হলে অন্ত্রের দেওয়ালে ছিদ্র হয়ে যায়। আর তখন অস্ত্রের কোষগুলিতে প্রদাহ শুরু হয়। এই ছিদ্র দিয়ে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণও হতে পারে। অন্ত্রের দেওয়াল ফেটে রক্তক্ষরণও শুরু হতে পারে। যে কারণে প্রচণ্ডভাবে পেট ব্যথা শুরু হবে শিশুর। আর তখন পেটে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
# এই রোগের প্রধান লক্ষণই হলো তলপেট ফুলেফেঁপে উঠবে। শিশুর প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হবে।
# মলের সঙ্গে রক্ত বের হবে।
# পেটখারাপ হবে।
# হলুদ কিংবা সবুজ রঙের বমি হবে।
# ওজন আরও কমাতে থাকবে, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি কমে যাবে।
# এটি হলে হৃৎস্পন্দের হার কমতে থাকবে।
# রক্তচাপও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
# এ মতাবস্থায় শিশু ঝিমিয়ে পড়বে।
রোগের চিকিৎসা করতে হলে অস্ত্রোপচার করাতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ন্যাসোগ্যাস্ট্রিক টিউব বসাতে হয়। বিভিন্ন অ্যান্টি-বায়োটিকও দেন চিকিৎসকরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org