দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অপুষ্টিতে অন্ততপক্ষে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রবিবার (২৯ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে এই তথ্য দিয়েছে।

সরকারি দপ্তরটি জানিয়েছে যে, দুধ, পুষ্টিকর খাবার এবং মানবিক সহায়তা ঢুকতে না দেওয়াকে এই মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, ‘ইসরায়েলের এই অবরোধ মূলত একটি যুদ্ধাপরাধ। এটি একপ্রকার ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে শিশু হত্যাকাণ্ড, যেখানে না খেতে দিয়ে ধীরে ধীরে শিশুদের মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে।’
দপ্তরটি আরও জানায় যে, ‘গাজার শিশুদের ওপর চলমান অপরাধ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের লজ্জাজনক নীরবতা মানবতার প্রতি চরম অবহেলারই প্রতিফলন।’
মানবিক এই বিপর্যয়ের জন্য ইসরায়েল ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো পশ্চিমা মিত্রদের দায়ী করেছে গাজা কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে জাতিসংঘকে আহ্বান জানানো হয়, যেনো অবিলম্বে গাজার সীমান্ত পথগুলো খুলে দেওয়া হয়।
এর আগে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে জানায় যে, গাজায় অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। মে মাসে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী অন্তত ৫ হাজার ১১৯ শিশুকে তীব্র অপুষ্টিজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যা এপ্রিলের তুলনায় ৫০ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৫০ শতাংশেরও বেশি।
ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক এই দুয়ার বেইগবেদার বলেন, ‘জানুয়ারি হতে মে পর্যন্ত মাত্র ১৫০ দিনে ১৬ হাজার ৭৩৬ শিশু অপুষ্টির চিকিৎসা পেয়েছে। অর্থাৎ যা দাড়াচ্ছে দিনে গড়ে ১১২ জন। অথচ প্রতিটি মৃত্যুই ছিলো প্রতিরোধযোগ্য। খাবার, পানি, ওষুধ- সবই সীমান্তে আটকে রয়েছে। মানবসৃষ্ট সিদ্ধান্তের কারণেই এই মৃত্যু।’
তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সীমান্ত দিয়ে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রবেশের অনুমতিও দিতে হবে।’
অপরদিকে, গতকাল (শনিবার) ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে অন্ততপক্ষে ৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় দু’টি টানা বিমান হামলায় ধসে পড়ে একাধিক আবাসিক ভবন। শুধু ওই একটি এলাকাতেই নিহত হয়েছেন ২০ জন, যাদের মধ্যে রয়েছে ৯ জন শিশু।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org