তীব্র অপুষ্টিতে সোয়া ৩ লাখ শিশু: গাজায় বাড়ছে ক্ষুধা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের আগ্রাসনের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। দিনকে দিন গাজায় বাড়ছে ক্ষুধা।

আলজাজিরার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে যে, শনিবার (২৩ আগস্ট) বেলা ৩টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় গাজায় অপুষ্টিতে আরও ৮ শিশু মারা গেছে। ইসরায়েল হামলা শুরুর পর গত প্রায় দুই বছরে গাজায় এ পর্যন্ত অন্তত ২৮১ জন অপুষ্টিতে মারা গেছে, যাদের মধ্যে শিশু ছিলো ১১৪টি।

অপরদিকে অপুষ্টির শিকার এইসব শিশুর চিকিৎসা করতে অন্তত ১০টি হাসপাতাল দরকার বলে জানিয়েছেন শহরটির আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া এবং নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের শিশু হাসপাতালের পরিচালক আহমদ আল-ফারা।

Related Post

আবু সালমিয়া বলেছেন, শিশুদের পাশাপাশি গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আহত হয়ে আরও যেসব ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন, তারাও বিভিন্ন মাত্রায় অপুষ্টিতে ভুগছেন। বর্তমানে অপুষ্টি গাজার অন্যতম প্রধান সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আল-ফারা বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ১২০টি শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার। যেসব শিশু এই অপুষ্টিতে ভুগছে, সারা জীবনই তাদের মাশুল গুনতে হবে।’

তাছাড়াও গত শুক্রবার দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার গাজা নগর প্রশাসনিক অঞ্চল এবং আশপাশের এলাকায় দুর্ভিক্ষ চলছে। এতে অন্তত ৫ লাখ ১৪ হাজার গাজাবাসী দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েন। বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী মাসের শেষের দিকে উপত্যকার মধ্যাঞ্চলের প্রশাসনিক অঞ্চল দেইর আল-বালাহ এবং দক্ষিণের খান ইউনিসেও দুর্ভিক্ষ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অপরদিকে জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের অনুদান এবং সহায়তায় পরিচালিত আইপিসির প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ইসরায়েল গাজায় দুর্ভিক্ষের দাবি অস্বীকার করেছে।

তবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আইপিসির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এক বিবৃতিতে গাজার দুর্ভিক্ষকে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ এবং ‘মানবতার ব্যর্থতা’ বলেও মন্তব্য করেছেন। সংস্থাটির মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক ‘গাজার দুর্ভিক্ষকে ইসরায়েল সরকারের কর্মকাণ্ডের সরাসরি ফলাফল’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন যে, গাজায় নিজেরা যে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে, সেটি অস্বীকার করা ইসরায়েলকে বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেছেন, যাদের (যেসব দেশের) প্রভাব রয়েছে, তাদের এটাকে (আইপিসির প্রতিবেদনকে) গুরুত্ব এবং নৈতিক দায়িত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত। জাতিসংঘের মানবিক কার্যক্রম বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব টম ফ্লেচারের বিবৃতি ধরে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আইপিসির প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় টম ফ্লেচার বলেছেন, ‘এই দুর্ভিক্ষ পুরোপুরিই ঠেকানো যেতো। তবে ইসরায়েলের পরিকল্পিত বাধায় গাজায় খাদ্য ঢুকতে পারছে না। সে কারণে দুর্ভিক্ষ তৈরি হয়েছে।’

মিসর সীমান্তে ত্রাণভর্তি হাজারো ট্রাক কয়েক মাস ধরে গাজায় ঢোকার অপেক্ষা করছে। তবে গত মার্চ থেকে ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেগুলো গাজায় প্রবেশও করতে পারছে না। মে মাসের শেষ থেকে তারা গাজায় সামান্য কিছু ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।

>>>>>>>>>>>>>>>>>>

করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা

আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।

১.⁠ ⁠COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:

i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।

২.⁠ ⁠এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।

৩.⁠ ⁠উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।

৪.⁠ ⁠তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।

৫.⁠ ⁠কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।

এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।

৬.⁠ ⁠যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।

এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।

সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।

✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।

ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ২৪, ২০২৫ 10:43 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…

% দিন আগে

চিন্তা করেই লেখা যাচ্ছে কম্পিউটারে শব্দ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…

% দিন আগে