দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউরিক অ্যাসিড মূলত শরীরে পিউরিন নামক উপাদান ভাঙনের ফলে তৈরি হয়। এটি সাধারণত কিডনির মাধ্যমে প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। তবে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে তা জটিলতা সৃষ্টি করে, যেমন গাউট (Gout), জয়েন্টে ব্যথা, কিডনিতে পাথর ইত্যাদি।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন
গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত লাল মাংস, সামুদ্রিক মাছ, লিভার, কিডনি জাতীয় অঙ্গ এবং ডালজাতীয় কিছু খাবারে উচ্চমাত্রার পিউরিন থাকে। এগুলো সীমিত করতে হবে।
অ্যালকোহল, বিশেষ করে বিয়ার ও মদ ইউরিক অ্যাসিড দ্রুত বাড়ায়। সম্পূর্ণভাবে বর্জন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
চিনি জাতীয় পানীয় ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা জরুরি, কারণ এগুলো বিপাক প্রক্রিয়া ব্যাহত করে।
পরিবর্তে, শাকসবজি, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাদ্য, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল, ও প্রচুর পানি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন
গবেষণা অনুসারে নিয়মিত ব্যায়াম ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। বিশেষত হাঁটা, সাইক্লিং বা যোগব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
স্থূলতা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য।
পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণও শরীরের হরমোন ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিকে পরোক্ষভাবে কমায়।
চিকিৎসকের পরামর্শ
নিয়মিত রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
প্রয়োজনে চিকিৎসক অলোপিউরিনল বা ফেবুক্সোস্ট্যাট জাতীয় ওষুধ দিয়ে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন। তবে এগুলো কেবল চিকিৎসকের নির্দেশে গ্রহণ করতে হবে।
গবেষণা থেকে স্পষ্ট, ইউরিক অ্যাসিড প্রতিরোধ একদিনে সম্ভব নয়; বরং এটি একটি নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। সুষম খাদ্য, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত চিকিৎসা পরীক্ষা—এসব একসাথে মেনে চললে ইউরিক অ্যাসিডের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়। তাই সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা হলো প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
# কাশি নেই।
# জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
# অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
# মাথাব্যথা।
# গলাব্যথা।
# পিঠে ব্যথা।
# নিউমোনিয়া।
# ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org