দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টমেটো একটি সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় সবজি-ফল যা বিশ্বব্যাপী খাদ্যতালিকায় ব্যবহৃত হয়। এটি শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না, বরং আমাদের শরীরের জন্য নানা ধরনের উপকারও করে।

এই টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত টমেটো খেলে হজমশক্তি উন্নত হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে সুরক্ষা মেলে। নিচে টমেটোর উপকারিতা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
টমেটো ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফলিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে। এসব উপাদান দেহের কোষকে পুষ্টি জোগায়, রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ভিটামিন সি আমাদের দেহে সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
টমেটোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লাইকোপিন প্রচুর পরিমাণে থাকে। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যানসারের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। লাইকোপিন ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে কোষ ক্ষতি হয় না এবং শরীর দীর্ঘদিন সুস্থ থাকে।
টমেটো হজমে সহায়ক। এতে উপস্থিত ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। যারা নিয়মিত টমেটো খান, তারা গ্যাস্ট্রিক বা হজমের সমস্যায় তুলনামূলক কম ভোগেন।
টমেটো হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী। টমেটোর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। এতে থাকা লাইকোপিন ও অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল কমায়, ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়।
টমেটো ত্বক ও সৌন্দর্যের জন্য উপকারী। টমেটো খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং বয়সের ছাপ কম দেখা দেয়। অনেকেই টমেটো সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করেন যা ব্রণ ও দাগ দূর করতে সহায়ক। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়।
টমেটো চোখের জন্যও ভালো। এতে ভিটামিন এ এবং ক্যারোটিনয়েড রয়েছে যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রাতকানা প্রতিরোধ করে।
যেহেতু টমেটো একটি সস্তা তবে অসাধারণ স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান। এটি শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখতেও ভূমিকা রাখে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সালাত হিসেবে কাঁচা টমেটো কিংবা রান্না করা টমেটো রাখা স্বাস্থ্য রক্ষায় একটি কার্যকর অভ্যাসও হতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org