দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রসুন একটি পরিচিত ভেষজ খাদ্য উপাদান, যা রান্নায় সুগন্ধ ও স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্য অসাধারণ উপকারী। প্রাচীনকাল থেকেই রসুনকে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এতে সালফার যৌগ, অ্যালিসিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
# রসুন হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর। এটি রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস পায়। এছাড়া রসুন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক, যা উচ্চ রক্তচাপে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য উপকারী।
# রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা অ্যালিসিন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। নিয়মিত রসুন খেলে ঠান্ডা-কাশি, ফ্লু বা সর্দি হওয়ার ঝুঁকি কমে।
# রসুনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক বলে গবেষণায় দেখা গেছে। বিশেষ করে পাকস্থলী ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে এটি ভূমিকা রাখতে পারে।
# ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও রসুন কার্যকর। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়।
এ ছাড়াও রসুন রক্ত পরিষ্কার করে ত্বক সুস্থ রাখে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। এটি হজম শক্তি বাড়ায়, গ্যাস ও অ্যাসিডিটি কমায় এবং অন্ত্রের ক্ষতিকর জীবাণু দমন করে।
তবে খালি পেটে কাঁচা রসুন খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এটি পাকস্থলীতে জ্বালা বা দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে, তাই পরিমাণমতো খাওয়াই ভালো।
রসুন একটি সহজলভ্য প্রাকৃতিক উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধ, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা, হজমশক্তি বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে পরিমিতভাবে খাওয়া স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য উত্তম।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org