দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ধনে পাতা আমাদের রান্নায় স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধির জন্য বহুল ব্যবহৃত একটি উপাদান। তবে শুধু স্বাদ বা সৌন্দর্য বৃদ্ধিই নয়, ধনে পাতার ভেতরে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণাবলি। এটি শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং নানা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হজমশক্তি বৃদ্ধিতে ধনে পাতা উপকারী। এতে থাকা প্রাকৃতিক তেল হজমের রস নিঃসরণে সহায়তা করে। ফলে অম্বল, গ্যাস ও পেট ফাঁপার সমস্যা দূর হয়। অনেক সময় ধনে পাতার রস হজমজনিত অসুবিধা দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
ধনে পাতায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে এবং ভিটামিন-এ। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। ভিটামিন-এ চোখের জন্য উপকারী, আর ভিটামিন-কে হাড় ও রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয়।
ধনে পাতা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ধনে পাতায় থাকা সক্রিয় উপাদান ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ধনে পাতা একটি প্রাকৃতিক ঔষধি খাবার হিসেবে বিবেচিত।
ধনে পাতায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্রি-র্যাডিকেল দূর করে। এর ফলে হৃদরোগ, ক্যানসার ও বার্ধক্যজনিত সমস্যার ঝুঁকি কমে। এছাড়া এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরল কমায়।
ধনে পাতা ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বকের সংক্রমণ, ব্রণ ও ফুসকুড়ি প্রতিরোধ করে। অনেকেই ধনে পাতার রস ত্বকে ব্যবহার করে ফর্সা ভাব বাড়ান। আবার চুল পড়া রোধ ও খুশকি কমাতেও ধনে পাতার ব্যবহার প্রচলিত।
ধনে পাতার ডিটক্সিফাইং গুণ শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। এটি কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং মূত্রনালি পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। এজন্য ধনে পাতার রস কিডনি ও লিভারের জন্য উপকারী বলে ধরা হয়।
এ ছাড়াও ধনে পাতা সর্দি-কাশি কমাতে, শ্বাসকষ্ট প্রশমনে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাশিয়াম থাকায় হাড় ও দাঁতের জন্যও এটি উপকারী।
সকলকেই মনে রাখতে হবে, কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ধনে পাতা খেলে অ্যালার্জি বা হজম সমস্যা হতে পারে। তাই এটি পরিমিতভাবে খাওয়াই উত্তম।
তাই বলা যায়, ধনে পাতা শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, বরং শরীরের জন্য অমূল্য উপকার বয়ে আনে। নিয়মিত ধনে পাতা খেলে হজম শক্তি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়, ত্বক ও চুল সুস্থ থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদে নানা জটিল রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on অক্টোবর ৬, ২০২৫ 12:06 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা তার বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন-“ফ্লোটিং…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…