দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৪০ জনেরও বেশি।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন যে, ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধারের পর মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার রাত স্থানীয় সময় প্রায় ১০টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা) সেবু প্রদেশের বোগো শহরের উপকূলে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও বহু ভবনও ধসে পড়ে। ভূমিকম্পে ১০০ বছরেরও বেশি পুরোনো একটি গির্জা ধসে গেছে।
সেবু প্রদেশ ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি, যেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ বসবাস করেন। তবে দেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর মাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সচল রয়েছে।
আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রদেশের উত্তরাঞ্চল। সান রেমিজিও শহরে জরুরি সেবা কার্যক্রম দ্রুত চালাতে ‘স্টেট অব ক্যালামিটি’ও ঘোষণা করা হয়েছে। শহরটির উপ-মেয়র আলফি রেইনেস স্থানীয় রেডিওকে জানিয়েছেন যে, ‘বৃষ্টি হচ্ছে, অপরদিকে বিদ্যুৎ নেই। পানির সরবরাহও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই উত্তরাঞ্চলে খাদ্য, পানি এবং ভারী যন্ত্রপাতি জরুরি ভিত্তিতে দরকার।’
প্রতিবেশী বোগো শহরে ভূমিকম্পের পর হাসপাতালের রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শক্তিশালী আফটারশকের কারণে অনেক বাসিন্দা এখনও রাস্তায় এবং আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভূ-পৃষ্ঠ হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে। তারপর একাধিক আফটারশক আঘাত হেনেছে, যারমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীর মাত্রা ছিল ৬। তবে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।
মূলত ফিলিপাইন প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত। এই অঞ্চলে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত প্রায় সময় ঘটে থাকে। এ বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে দু’টি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল, যদিও সেগুলোতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দেশটিতে ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org