দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা নগরীতে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী ও দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ এক সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত হন। দক্ষিণ গাজার জর্ডানিয়ান হাসপাতালের কাছে এই গোলাগুলির ঘটনাটি ঘটেছে ১১ অক্টোবর।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা শহরটির ভেতরে অবস্থানরত একদল সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যকে ঘিরে ফেলেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়ে যায়। এই সময় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৮ সদস্য নিহত হন।
স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার থেকে চলা এই সংঘর্ষে দুগমুশ গোত্রের ১৯ সদস্য ও হামাসের ৮ যোদ্ধা প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তেল আল-হাওয়ার একটি আবাসিক ভবনে দুগমুশ যোদ্ধারা অবস্থান করেন। খবর পেয়ে হামাসের প্রায় ৩ শতাধিক যোদ্ধা সেখানে অভিযান চালালে গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়।
তীব্র সংঘর্ষে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গোলাগুলির মধ্যে পড়ে অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। তাদের অনেকেই আগে ইসরায়েলি হামলায় বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, ‘মানুষ এবার ইসরায়েলি হামলা হতে পালাচ্ছিল না, তারা পালাচ্ছিল নিজেদের লোকদের কাছ থেকেই।’
দুগমুশ গাজার অন্যতম প্রভাবশালী একটি গোত্র। হামাসের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। অতীতেও তাদের সশস্ত্র সদস্যরা হামাসের সঙ্গে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়ায়।
এদিকে দুগমুশ গোত্রের একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, হামাস যোদ্ধারা একসময় জর্ডানিয়ান হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবনে প্রবেশের চেষ্টাও করেন। আল-সাব্রা পাড়ায় ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর সেখানেই আশ্রয় নিয়েছিল তাদের গোত্রের কয়েকটি পরিবার। ওই সূত্রের দাবি হলো, হামাস ওই পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করে ভবনটিকে তাদের নতুন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছিলো।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org