দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মানতে যদি ব্যর্থ হয়, তবে ইসরায়েলকে নতুন করে আবারও গাজায় অভিযান চালাতে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। সংবাদ মাধ্যমটির খবরে বলা হয়, সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, “আমি বললেই ইসরায়েল রাস্তায় নেমে পড়বে।’ তার মতে, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তগুলো বাস্তবায়ন করতে যদি ব্যর্থ হয়, তবে তিনি ইসরায়েলকে গাজায় আবারও সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দিতে পারেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেন, ‘হামাস নিয়ে যা ঘটছে, তা খুব দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে’ ও “আমি-ই ওদের (ইসরায়েলকে) এখন পর্যন্ত থামিয়ে রেখেছি।’
হামাস যদি নিরস্ত্র হতে অস্বীকার করে, এমন প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় ফিরে যাবে। ইসরায়েল যদি চায়, তারা ওদেরকে একেবারে গুঁড়িয়ে দিতে পারে।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে হামাসকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিহত অন্যদের মরদেহও ফেরত দিতে হবে ও অস্ত্র জমা দিতে হবে।
অপরদিকে হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডস এক বিবৃতিতে জানায় যে, ‘আমরা চুক্তি অনুযায়ী সব জীবিত বন্দিকেই হস্তান্তর করেছি, সেইসঙ্গে যেসব মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, সেগুলোও দিয়েছি।’ হামাস জানিয়েছে, বাকি মরদেহগুলো উদ্ধার করতে ‘বিশেষ সরঞ্জাম এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টা প্রয়োজন’ এবং তারা “এই কাজ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন’।
এর আগে গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর তার প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল এবং হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই পরিকল্পনায় গাজায় যুদ্ধবিরতি, সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় ও ধীরে ধীরে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহারের কথাও বলা হয়েছে।
তারপর গত শুক্রবার থেকে ওই চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। এতে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দি এবং ৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করে, বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়। চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে গাজায় হামাসবিহীন একটি নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গঠন, আন্তর্জাতিক যৌথ বাহিনী মোতায়েন ও হামাসের নিরস্ত্রীকরণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০২৩ সালের অক্টোবর হতে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৬৭ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org