দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিজের উত্তরসূরীর নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গতপরশু (রবিবার) এক লিখিত ঘোষণায় ৮৯ বছর বয়সী আব্বাস বলেছেন যে, যদি কখনও তিনি আর দায়িত্ব পালন করার মতো অবস্থায় না থাকেন, তখন অস্থায়ীভাবে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল শেখ।

মাহমুদ আব্বাসের এই ঘোষণাটি ছেপেছে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা। সেখানে তিনি বলেছেন, “কোনো কারণে যদি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) প্রধানের পদ শূন্য হয়ে যায়, তখন ফিলিস্তিনের এবং প্যালেস্টাইনিয়ান লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল শেখ অস্থায়ীভাবে এই পদটিতে স্থলাভিষিক্ত হবেন। তার দায়িত্ব হবে ফিলিস্তিনের নির্বাচনী আইন মেনে নির্বাচনের আয়োজন করা ও এরপর নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।”
ফিলিস্তিনের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। যদি অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার কারণে তা সম্ভব নাও হয়, তাহলে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট আরও এক মেয়াদ এই পদে থাকতে পারবেন।
সংবিধানের ডিক্রি নম্বর এক-এ আরও বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পদ কোনো কারণে শূন্য হয়ে গেলে পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন ফিলিস্তিনের পার্লামেন্ট প্যালেস্টাইনিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কিংবা স্পিকার।
মাহমুদ আব্বাসের সাম্প্রতিক ঘোষণা সংবিধানের ওই ডিক্রি নম্বর ১-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়া ডিক্রিটি বাতিল করা হয়েছে। মাহমুদ আব্বাসের ঘোষণায় এর ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়।
লিখিত ঘোষণায় এ সম্পর্কে মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, “ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা রক্ষা, মাতৃভূমির নিরাপত্তা ও ফিলিস্তিনের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সুরক্ষার স্বার্থে সংবিধানের এই এক নম্বর ডিক্রি বাতিল করা হলো।”
মাহমুদ আব্বাস গত ২০ বছর ধরেই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের পদে রয়েছেন। ২০০৪ সালের নভেম্বরে পরলোকগমন করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ও অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাত। আরাফাতের মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরি হিসেবে ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হন মাহমুদ আব্বাস। তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org