দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাজ্য ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্ব এবং সৃজনশীল সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত ‘কানেকশনস থ্রু কালচার গ্রান্ট প্রোগ্রাম ২০২৫’-এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।

ব্রিটিশ কাউন্সিল অনলাইনে প্রস্তাবনার উন্মুক্ত আহ্বানের মাধ্যমে নির্বাচিত ১৯টি দেশে মোট ১২৭টি অনুদান প্রদান করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে এই বছর ৭টি অনুদান প্রদান করা হয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া এই গ্রান্ট প্রোগ্রামের আবেদন এবং অনুদান সংখ্যা দুটোই এই বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, যা এই উদ্যোগের প্রতি শিল্পীদের এবং সাংস্কৃতিক পেশাজীবীদের আগ্রহ ও অংশগ্রহণকে তুলে ধরে। এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের শিল্পক্ষেত্রের মধ্যবর্তী সৃজনশীল সংযোগ, জ্ঞান বিনিময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাংস্কৃতিক উন্নয়নের সম্ভাবনাকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
এই গ্র্যান্ট নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কেহকাশা সাবাহ ও যুক্তরাজ্যের বেনজামিন কুক ‘মিডনাইটস থার্ড চাইল্ড’ প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করবেন। আর বাংলাদেশের পাঠশালা ইনস্টিটিউট এবং যুক্তরাজ্যের গ্রেইন প্রজেক্টস সিআইসি’র আলোকচিত্রীরা ‘রেজিস্টেন্স, রি-ইমাজিন: ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি রেসিডেন্সি’ প্রকল্পে কাজ করবেন।
বাংলাদেশের জিহান করিম এবং যুক্তরাজ্যের প্লে অফিসের থমাস বাকলি একসঙ্গে কাজ করবেন ‘এ শেয়ারড জার্নি অব লার্নিং অ্যান্ড ক্রিয়েশন’ নিয়ে। এই প্রকল্পে তারা এক্সআর, ইমারসিভ স্টোরিটেলিং এবং মৌখিক ইতিহাস ব্যবহার করে স্মৃতি, প্রবাস ও পরিচয় নিয়ে কাজ করবেন।
একইভাবে, বাংলাদেশের ব্যাক আর্ট ফাউন্ডেশনের শুভ ও সাহা এবং যুক্তরাজ্যের স্টেট অব দ্য [আর্ট] -এর মুনোটিদা চিনইয়াঙ্গা শব্দের ব্যবহার এবং গল্প বলার বয়ানভঙ্গি ব্যবহার করে ‘টু প্লেসেস অ্যাট ওয়ান্স’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করবেন। এ প্রকল্পে জলবায়ু, অভিবাসন এবং আত্ম-পরিচয়কে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এ ছাড়াও, বাংলাদেশের সুন্দরম এবং যুক্তরাজ্যের বার্ডস অব প্যারাডাইস থিয়েটার কোম্পানি একসাথে ‘দ্য স্পেস বিটুইন আস: থিয়েটার, অ্যাক্সেস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ’ প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে। এই প্রকল্পে যৌথ কর্মশালা এবং মেন্টরশিপের মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পীদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক পারফরমেন্স করা হবে। বাংলাদেশের সুরকার নীল কামরুল এবং বার্মিংহাম কনটেম্পোরারি মিউজিক গ্রুপ (বিসিএমজি) যৌথভাবে উপস্থাপন করবে ‘দ্য স্টোরি অব মায়া: হোমকামিং।’ এই প্রকল্প বিসিএমজি -এর ‘মিউজিক ইন ডায়লগ’ সিরিজের অংশ।
বাংলাদেশের দৃক পিকচার লাইব্রেরি এবং যুক্ত্ররাজ্যের বুক ওয়ার্কস কাজ করবে ‘আনবাইন্ডিং বুকবাইন্ডিং’ প্রকল্প নিয়ে। এটি একটি গবেষণা এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প, যেখানে বাংলাদেশের হাতে তৈরি বই বাঁধাইয়ের ঐতিহ্যবাহী কৌশলকে ‘বুক ওয়ার্কস’ -এর বিশেষ নকশা এবং প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় করা হয়।
এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের হেড অফ আর্টস সাদিয়া রহমান বলেছেন, “এই ৭টি সফল প্রস্তাবনার প্রতিটিই একটি শক্তিশালী ও অনুপ্রাণিত দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে, যা যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের শিল্পী ও সংগঠনগুলোর মধ্যে যৌথ সৃজন, সহ-উৎপাদন এবং সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও বিষয়ের প্রতিক্রিয়া প্রকাশের সুযোগ তৈরি করে- নতুন, উদ্ভাবনী, আকর্ষণীয় এবং সহজবোধ্য উপায়ে। এই উদ্যোগগুলিই প্রমাণ করে যে শিল্পের অসাধারণ শক্তি রয়েছে উদ্ভাবন, সংলাপ এবং সংযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে।”
“কানেকশন্স থ্রু কালচার প্রোগ্রামটিকে অনন্য করে তোলে এর বৈচিত্র্য—যেখানে বিভিন্ন ঐতিহ্য, চিন্তা এবং শিল্পচর্চা একত্রিত হয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করছে,” বলেছেন রুথ ম্যাকেঞ্জি সিবিই, আর্টস ডিরেক্টর, ব্রিটিশ কাউন্সিল। তিনি আরও বলেন, “এই গ্রান্ট প্রোগ্রাম সম্প্রসারণের মাধ্যমে বৈচিত্রময় কণ্ঠস্বর এবং কমিউনিটিকে যুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে, যা সীমান্ত পেরিয়ে শান্তি, আস্থা এবং সমৃদ্ধি আনয়নে শিল্পের ভূমিকা আরও দৃঢ় করছে।
এই পর্বে ব্রিটিশ কাউন্সিল দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও বিস্তৃত ইউরোপজুড়ে অনুদানপ্রাপ্তদের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৩৩ ব্রিটিশ পাউন্ড সমমূল্যের অনুদান প্রদান করছে।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org