মাখনের পরিবর্তে পিনাট বাটার খেলে কী কোলেস্টেরল কমবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময় হৃদরোগ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাই অনেকেই এখন খাবার তালিকায় স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প খুঁজছেন।

বিশেষ করে প্রাতঃরাশে মাখনের পরিবর্তে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন পিনাট বাটার বা চিনাবাদামের মাখন। কিন্তু প্রশ্ন হলো- মাখনের পরিবর্তে পিনাট বাটার খেলে কি সত্যিই কোলেস্টেরল কমে?

পুষ্টিবিদদের মতে, এই প্রশ্নের উত্তর হলো হ্যাঁ- কিছুটা কমতে পারে, তবে তা নির্ভর করে পরিমাণ ও ব্যবহারের ধরনের ওপর। সাধারণ মাখনে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বি, যা “খারাপ কোলেস্টেরল” (LDL) বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে, প্রাকৃতিক পিনাট বাটারে থাকে মনো-আনস্যাচুরেটেড ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা “ভালো কোলেস্টেরল” (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে এবং একই সঙ্গে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

Related Post

পিনাট বাটারে এ ছাড়াও থাকে প্রোটিন, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এসব উপাদান রক্তনালিতে প্লাক জমা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। ফলে, নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে পিনাট বাটার খেলে দীর্ঘমেয়াদে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হতে পারে।

তবে বাজারে পাওয়া অনেক পিনাট বাটারে চিনি, লবণ ও হাইড্রোজেনেটেড তেল যোগ করা থাকে, যা উল্টোভাবে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই লেবেল পড়ে এমন ব্র্যান্ড বেছে নিতে হবে যেগুলোর উপাদানে “100% peanuts” বা “no added sugar and salt” লেখা থাকে।

এছাড়াও, পিনাট বাটার স্বাস্থ্যকর হলেও এটি ক্যালরিতে বেশ সমৃদ্ধ। প্রতি দুই টেবিলচামচে প্রায় ২০০ ক্যালরি থাকে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দিনে এক থেকে দুই চামচের বেশি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত খেলে ভালো কোলেস্টেরলের পাশাপাশি মোট চর্বির মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, মাখনের তুলনায় পিনাট বাটার অবশ্যই ভালো বিকল্প, কারণ এতে ট্রান্সফ্যাট নেই এবং এটি উদ্ভিজ্জ উৎসের। তবে এটি কোলেস্টেরল কমানোর একমাত্র উপায় নয়- এর সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান, ফলমূল এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াও জরুরি।

মাখনের পরিবর্তে পিনাট বাটার খাওয়া হৃদযন্ত্রের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং উপকারী। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। তবে পরিমিত পরিমাণে ও প্রাকৃতিক ধরনের পিনাট বাটার বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে এটি আপনার হৃদয়ের যত্নে হতে পারে একটি সুস্বাদু সহায়ক।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on নভেম্বর ১০, ২০২৫ 3:30 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…

% দিন আগে

চিন্তা করেই লেখা যাচ্ছে কম্পিউটারে শব্দ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…

% দিন আগে