দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডে বেশ জাঁকালোভাবেই শুরু হয় রিয়া সেনের পথচলা। মা মুনমুন সেন, নানি সুচিত্রা সেন- দুই প্রজন্মের তারকার আলো যেনো উত্তরাধিকার হিসেবেই পেয়েছেন তিনি।

মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ফাল্গুনী পাঠকের ‘ইয়াদ পিয়া কি আনে লগি’ মিউজিক ভিডিওর মাধ্যমে রাতারাতি পরিচিতি পান তিনি। তারপর ‘স্টাইল’সহ কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি তাকে আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত করে। মডেলিংয়ের পাশাপাশি হিন্দি–বাংলা—সব ভাষার ছবির প্রস্তাব পাওয়া শুরু হয়ে যায় তার।
তবে উঠতির ক্যারিয়ারে হঠাৎই যেনো ছন্দপতন। অনেক ছবিতে কাজ করলেও উল্লেখযোগ্য চরিত্র তার জোটেনি। বলিউডে ‘প্রমিনেন্ট ফেস’ থেকে তিনি ধীরে ধীরে ব্যাকসিটে চলে যেতে থাকেন।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিয়া বলেছেন, শুরুর দিকে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিতই ছিলেন। সাফল্যও যেনো দ্রুতই মিলেছিল। তবে কিছুদিন পর থেকেই তাকে অস্বস্তিতে ফেলতে শুরু করে। রিয়া বলেন, “আমি বুঝতে পারলাম, আমি যে চরিত্রগুলো করছি, সেগুলো আমার সঙ্গে মোটেও মানাচ্ছে না। স্বচ্ছন্দ না থেকেও করতে হচ্ছিল আমাকে। তখন বলিউডে মেয়েদের ক্ষেত্রে সবকিছুই নির্ভর করতো বাহ্যিক গ্ল্যামারের ওপর- কী পোশাক, কী মেকআপ… সবই।”
স্কুলে পড়ার বয়সে ‘সাহসী অভিনেত্রী’র তকমা পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। রিয়ার ভাষায়, “বাইরে বের হলেও মানুষ ভাবতো, পর্দার সেই রিয়া আমি বাস্তবেও। নিজেকে দেখলেই মনে হতো- এটা কী সত্যিই আমি?”
গ্ল্যামারের চাপ তাকে আরও যেনো বিহ্বল করে তোলে। চুল কোঁকড়ানো–ভারী মেকআপ নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সেটে বসে থাকা- একসময় টানতো না তাকে। তখনই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন বলিউড হতে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার।
যেটি বলিউডের জন্য ক্ষতিই ছিল, সেটিই বাংলা সিনেমার জন্য লাভ। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘নৌকাডুবি’ (২০১১) ছবিতে যেনো নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করলেন রিয়া। তারপর ‘জাতিস্মর’, ‘হিরো ৪২০’সহ একাধিক বাংলা সিনেমায় অভিনয় করে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেন তিনি। তার মতে, “বাংলা সিনেমায় আমি আমার নিজের মতোই হতে পেরেছি। এখানকার পরিচালকরাই আমাকে বেশি বুঝেছেন।”
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের উত্থান তার ক্যারিয়ারকে যেনো নতুন দিশা দেয়। ‘রাগিণী এমএমএস: রিটার্নস’, ‘পয়জন’, ‘মিসম্যাচ’- এমন বহু ওয়েব সিরিজে দেখা যায় তাকে। “ওটিটি কাজ আমাকে বিভিন্ন চরিত্রে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে। এখানেই নিজেকে বেশি করে মানায়,” বলেছেন রিয়া।
তবে অনেকের মতেই, রিয়ার বলিউড ক্যারিয়ারে বড় ধাক্কা আসে ২০০৫ সালের ব্যক্তিগত ভিডিও ফাঁস–কাণ্ডের পরই। সেই সময়কার প্রেমিক আসমিত প্যাটেলের সঙ্গে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, বাদ পড়েন বেশ কিছু ছবির তালিকা থেকে।
রিয়া বর্তমানে সিনেমা এবং সিরিজের পার্শ্বচরিত্রে বেশি দেখা যায়। এ বছর মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত হিন্দি সিনেমা ‘নাদানিয়া’। আর মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘পরিণীতা’।
উত্থান, বিতর্ক, ব্যর্থতা- সব পেরিয়ে এখন ধীরে ধীরে নতুন পথেই হাঁটছেন রিয়া সেন। তার ভাষায়, “বলিউডে ফিরতে আমার আপত্তি নেই, তবে এখন যেখানে আছি- সেখানেই আমি খুব খুশি।”
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org