স্বাস্থ্য সচেতন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পেয়ারা খেতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া। আমাদের চারপাশে যত ফল পাওয়া যায়, তার মধ্যে পেয়ারা এমন একটি ফল যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং সব বয়সী মানুষের জন্য সমান উপকারী।

বাজারে সারা বছর সহজলভ্য এই ফলটি শুধু সুস্বাদুই নয়, বরং নিয়মিত খেলে শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই স্বাস্থ্য সচেতন হতে চাইলে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পেয়ারা থাকা জরুরি।

পেয়ারা ভিটামিন ‘সি’-তে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। একটি মাঝারি আকারের পেয়ারায় থাকে প্রায় একটি কমলার দ্বিগুণ ভিটামিন সি। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে কার্যকর। শীত কিংবা গরম– যেকোনো মৌসুমেই সর্দি, কাশি বা বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী রাখা প্রয়োজন, আর সেই কাজটি সহজেই করে পেয়ারার ভিটামিন সি।

Related Post

এ ছাড়াও পেয়ারা খাদ্যআঁশে পরিপূর্ণ, যা আমাদের হজমশক্তি উন্নত করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য পেয়ারা নিয়মিত খাওয়া অনেক উপকারী। আঁশযুক্ত খাবার পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের কার্যক্রম সুস্থ রাখে। ফলে হজমজনিত অসুস্থতা বা অস্বস্তি কমে যায়।

পেয়ারায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিক্যালে বিরুদ্ধে কাজ করে। এই উপাদানগুলো বার্ধক্যজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে রাখে সতেজ ও উজ্জ্বল। পাশাপাশি পেয়ারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। এতে চিনি কম থাকে এবং উচ্চ আঁশ রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়তে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীও নির্দ্বিধায় নিয়মিত পেয়ারা খেতে পারেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পেয়ারা হৃদ্‌স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। এতে থাকা পটাসিয়াম ও লাইকোপিন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ধমনিতে ক্ষতিকর চর্বি জমতে বাধা দেয়। নিয়মিত পেয়ারা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং শরীর থাকে চাঙ্গা।

স্বাস্থ্য সচেতনতা মানে শুধু ব্যায়াম করা নয়, বরং সঠিক খাবারের মাধ্যমে শরীরের উপকার করা। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি বা দুটি পেয়ারা যোগ করলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই শরীরকে পুষ্টি দিচ্ছেন। এটি সস্তা, সহজলভ্য এবং উপকারী- যে কারণে একে স্বাস্থ্যবান হওয়ার সহজ পথ বলা যায়। তাই শরীর ভালো রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে আজ থেকেই আপনার খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখুন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ডিসেম্বর ৪, ২০২৫ 5:07 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে

ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার না বলা কথা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…

% দিন আগে

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য ‘মেঘে ভাসমান’ বাড়ি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা তার বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন-“ফ্লোটিং…

% দিন আগে

এমন সুন্দর প্রকৃতি বোধহয় আর হতে পারে না

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

পাতা কপি আমাদের কি কি উপকার করে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালীন সবজির তালিকায় পাতা কপি বা বাঁধাকপি অন্যতম জনপ্রিয় এবং…

% দিন আগে