ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ বিশ্বের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের রফতানি খাতে পোশাক শিল্প এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু এই পোশাক শিল্পকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলে আসছে। কখনও এই শিল্পে শ্রমিকদের খেপিয়ে দিয়ে বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, আবার কখনও কৌটা পদ্ধতি চালু করে আমাদের পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
সমপ্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে তারা তাদের বিভিন্ন মনোভাব জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, বর্তমান বাজার দরের চেয়ে তুলনায় অধিক মূল্যে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কিনতে আগ্রহী ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে কারখানার শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও পরিবেশগত বিষয়গুলোকে নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে এই সংস্থা। ১৫ মে সকালে রাজধানীর গুলশানের লাভিটা লেক শ্যোর হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর উইলিয়াম হানা সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা জানান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইইউ’র হেড অব পলিটিক্যাল ইকোনমিক এনড্রিও বার্নার্ড। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসের বাণিজ্য উপদেষ্টা জিল্লুল হাই রাজ। উইলিয়াম হানা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতারা কোন পণ্য ক্রয়ের সময় সেই পণ্য উৎপাদনকালীন পরিবেশ এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি জানতে চান। এ জন্য কারখানার পরিবেশগত ও শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে, সুতরাং এখানকার রফতানিকারকরা তাদের জন্য ভালোটা বুঝতে পারবেন।
শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন নয়, সবাই চাই এদেশের শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা তারা বুঝে পাক। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল সব সময় এ দেশের পোশাক শিল্পকে নিয়ে খেলায় মেতে থাকেন। আর এই কারণে দেশের এই সম্ভাবনাময় শিল্পটি আজ সংকটময় সময় অতিক্রান্ত করছে। বিশ্বের বাজারে আমাদের এই পোশাকের এতো চাহিদা থাকা সত্বেও কেনো আমরা পিছিয়ে যাবো এই প্রশ্ন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের।
এ বিষয়ে আলাপ হয় একজন পোশাক কারখানার মালিকের সঙ্গে। তিনি জানান, আমাদের বায়াররা আমাদের তৈরি পোশাক সব সময় পছন্দ করে। অন্যান্য দেশের থেকে বাংলাদেশের পোশাক তাদের বেশি পছন্দ। কিন্তু এই খবর অনেক দেশের কাছেই সুখকর নয়। আর তাই আমাদের দেশের শ্রমিক অসন্তোষ ঘটার পিছনে যদি বৈদেশিক কোন মহল জড়িত থাকে তাহলে আমরা সেটিকে মিথ্যা বলব না। তিনি মনে করেন, যত ষড়যন্ত্রই থাক না কেনো, যদি সরকার ঠিক থাকে তাহলে সকল পরিস্থিতি আমরা সামাল দিতে পারবো। কারণ এখানে আমাদের শুধু নিজেদের নয়, দেশের ভাবমূর্তিও অনেকটা নির্ভর করে।