ইতিহাসের জন্ম দেবার পর কেমন লাগছে সোহাগ গাজীর? সংবাদ সম্মেলনে লাজুক মুখে স্রেফ ভালো লাগছে বলেই নিজের অনুভূতি জানিয়ে দিলেন! সাংবাদিকরা চাপাচাপি করলে অধিনায়কের দিকে বিব্রত হাসি দিয়ে বললেন ‘ভালোর পরে তো আর কিছু নেই! হ্যাটট্রিক হয়ে যাওয়ার পরে কোনো কিছুই মনে হয়নি, হঠাৎ করেই হয়ে গেছে!’
আসুন সোহাগের হ্যাটট্রিকের সময়টা একটু ফুটিয়ে তোলা যাক! নিউজিল্যাণ্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৪.২ এবং ৮৪.৩ ওভারে এন্ডারসন এবং ওয়াটলিংয়ের উইকেট নিয়ে নিলেন টানা দুই বলে। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেন সোহাগ গাজী। অধিনায়ক মুশফিক পরিকল্পনামাফিক ফিল্ডিং সাজিয়ে নিলেন। মুশফিক সাধারণত এসময় বোলারের সাথে একটু কথা বলে নেন, কিন্তু এদিন সোহাগের সাথে কোন কথাই বলেননি। পরের জানান তিনি সোহাগকে স্বাভাবিক খেলতে দিতে চেয়েছেন। উইকেটের পেছনে মুশফিক ছাড়াও দুই পাশে ছিলেন নাসির হোসেন এবং সাকিব আল হাসান। সোহাগ মাত্রই ব্রেওয়েলের দিকে বল ছুঁড়ে দিলেন হ্যাটট্রিকের উদ্দেশ্যে। ব্রেসওয়েলের ব্যাটের কানায় লেগে মুশফিকের প্যাড ছুঁয়ে বল উঠে গেল আকাশে। ডানপাশে থাকা নাসির ছুটে এসে বল নিতে গেলেও থমকে বসে গেলেন কারণ ততক্ষণে বামপাশ থেকে সাকিব ছুটে চলে এসেছেন প্রাণপণে, ঝাঁপিয়ে পড়ে ডাইভ দিয়ে ডান হাতে বল ধরে ফেললেন। এরপর পুরো দল মেতে উঠলো যে অবিশ্বাস্য আনন্দে নীচের ছবিটিই তার প্রমাণ!
সংবাদ সম্মেলনে গাজী বলেন, “আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না কি হয়ে গেলো! হ্যাটট্রিকের ৯৯ শতাংশ কাজই করে দিয়েছেন সাকিব ভাই! যখন বল মুশফিক ভাইয়ের প্যাডে লেগে আকাশে উঠে গেলো, নাসির ভাই ছুটতে গেলেও থেমে গেলেন তখন থেকে সাকিব ভাই ডাইভ দিয়ে বল ধরার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সময় আমার কাছে থমকে গিয়েছিলো!”
ভিডিও টি দেখুন YouTube এ –
http://www.youtube.com/watch?v=y1aH73PaZuI
১৩৬ বছরের টেস্ট ইতিহাসের প্রতি মুহূর্ত জড়িয়ে রোমাঞ্চ, উত্তেজনা, সাফল্য-ব্যর্থতার হাজারো আখ্যান, অভাবনীয় সব কীর্তি। কিন্তু যে সময়টায় সোহাগের কাছে সময় থমকে গেলো তেমন কিছু আর কখনোই দেখেনি টেস্ট ক্রিকেট! সেঞ্চুরি+হ্যাটট্রিক+পাঁচ বা তার বেশী উইকেটের নতুন এলিট ক্লাবের একমাত্র সদস্য এখন সোহাগ গাজীই।