দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুরু হয়েছে এক স্নায়ু যুদ্ধ। কবে যে এর শেষ হবে তা কেও বলতে পারছে না। ভারতের কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাদেকে অপদস্থ করার ঘটনা নিয়েই শুরু হয়েছে এ স্নায়ু যুদ্ধ।
উভয় দেশ এখন তাদের মতো করে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ফলাফল শূন্য। অপরদিকে ক্ষুব্ধ ভারত কড়া ভাষায় বলে দিয়েছে, দেবযানীকে অপদস্থ করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ‘প্রহসন’ বরদাশত করা হবে না। ভারত সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, দিন বদলে গেছে- এ বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্রের মাথায় রাখতে হবে।
দেবযানীর ঘটনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে বলা হচ্ছে, ‘যেমন বুনো ওল, তেমনি বাঘা তেঁতুল’, ঠিক এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দেবযানীর ঘটনা নিয়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চরম উত্তেজনা চলে আসছে। উত্তেজনা প্রশমনে অবশ্য গত বৃহস্পতিবার ‘দুঃখ প্রকাশ’ করে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননকে ফোন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। একই দিন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংকে ফোন করেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়েন্ডি শেরম্যানও। গতকাল শুক্রবারও দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক করেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল আসেনি। ভারত স্পষ্টই বলেছে, দুঃখ প্রকাশ করে কোনো ফায়দা হবে না। ক্ষমা চাইতে হবে এবং মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তারা কোনো ‘প্রহসন’ মেনে নেবে না।
তবে দেবযানী ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। তারাও স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, দেবযানীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও মামলা প্রত্যাহার করা হবে না। এটা যুক্তরাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়ায়ই চলবে। সুতরাং দেবযানী ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে আরো উত্তেজনা বাড়লো বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, ভিসা জালিয়াতি ও তথ্য গোপনের অভিযোগে নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানীকে (৩৯) গত ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ তাঁকে বিবস্ত্র করে তল্লাশি করে এবং শুধু তাই নয়, জামিন পাওয়ার আগ পর্যন্ত দাগি অপরাধীদের সঙ্গে তাঁকে হাজতে আটকে রাখে। অবশ্য পরদিন ম্যানহাটান আদালতে আড়াই লাখ ডলার মুচলেকা দিয়ে জামিন পান দেবযানী। ভারতীয় নারী সঙ্গীতা রিচার্ডকে বেবি সিটার ও গৃহকর্মী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সময় ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। অপরদিকে দেবযানী তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।