দি ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ প্রতি সপ্তাহের মতো আজও আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- কয়েকটি আশ্চর্যজনক গল্প: যে বাড়িতে সুর বাজে বৃষ্টিতে।
যে বাড়িতে সুর বাজে বৃষ্টিতে
বাড়িটির নাম নেউস্টাড্থ কুন্স্থ অব পাসেজ (Neustadt Kunsth of passage), অন্যান্য সাধারণ বাড়ির মতোই এটি পাঁচ তলাবিশিষ্ট ইট-পাথরের বিল্ডিং। তবে যে বৈশিষ্ট্যের জন্য বাড়িটি বৈচিত্র্যতার মাঝে স্থান পেয়েছে তা হল বাড়িটি জলতরঙ্গের সৃষ্টি করে যা অতি মনোরম ও চমৎকার সুরের সৃষ্টি করে। অর্থাৎ বাড়িটির স্থপতি এর উপরতলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত বাড়ির বাইরের দেয়ালে সিম্ফনি, ট্রাম্পেট এবং আরও কিছু বাদ্যযন্ত্র এমনভাবে সুকৌশলে স্থাপন করেছেন যেন এদের ওপর পানি পড়লেই এসব বাদ্যযন্ত্রের গায়ে লেগে ও ভেতর দিয়ে নিচে পড়তে থাকলে সুন্দর মনোজ্ঞ সুর ও তালের সৃষ্টি হয়। তাই বৃষ্টির সময় নেউস্টাড্থ কুন্স্থ অব পাসেজের কাছে দাঁড়ালেই বৃষ্টির ছন্দপতনে সুরের মূর্ছনা বিমোহিত করে। চমৎকার ও অভিনব শিল্পগুণসম্পন্ন এ বাড়িটি জার্মানের ড্রেসডেন (Dresden) এ অবস্থিত।
শিশুর রোগ সংক্রমণ কমায় পোষা কুকুরের সান্নিধ্য
পোষা কুকুরের সান্নিধ্যে থাকা শিশুরা প্রাণীশূন্য বাড়ির শিশুদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কানে কম শোনা ও শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে থাকে। সমপ্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণামূলক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মার্কিন সাময়িকী পেডিয়াট্রিকসে এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পোষা প্রাণীর সংস্পর্শ কেন ছোট বাচ্চাদের এ ধরনের কিছু রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে সে সম্পর্কে প্রতিবেদনে অবশ্য কিছু বলা হয়নি। এতে পরামর্শমূলকভাবে বলা হয়েছে, দিনের কিছুটা সময় বাড়ির বাইরে কাটানো পোষা কুকুরের সাহচর্য পেলে শিশুদের জীবনের প্রথম বছর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। কুকুরের মতো বিড়ালের সাহচর্যেও শিশুরা কিছু রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু এর প্রভাব কুকুরের তুলনায় কিছুটা কম। ফিনল্যান্ডের ৩৯৭টি শিশুর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা এ ফলাফল পেয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সার্বিকভাবে বাড়ির ভেতর বিড়াল কিংবা কুকুরের সংস্পর্শে থাকা শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত বিভিন্ন উপসর্গ যেমন- কফ, হাঁপানির মতো শ্বাস-প্রশ্বাস, নাক বন্ধ হয়ে আসা ও জ্বর প্রায় ৩০ শতাংশ এবং কানের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশের মতো হ্রাস পায়।
নিঃসঙ্গতা মৃত্যু ডেকে আনে
নিঃসঙ্গতা মানুষকে শুধু অসুখীই করে না, মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়। নিঃসঙ্গতা মানুষকে যেমন মানসিকভাবে অসুস্থ করে তোলে, তেমনি হূদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার মতো নানা রোগে আক্রান্ত করে। নানা গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন দাবিই করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে নিঃসঙ্গতা সমস্যার সমাধানে কাজ করছে, এমন কর্মসূচি ক্যাম্পেইন টু অ্যান্ড লোনলিনেসের পরিচালক লরা ফার্গুসন বলেন, নিঃসঙ্গতা একটি জনস্বাস্থ্যসম্পর্কিত সমস্যা। দ্রুত এ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেয়া উচিত। তিনি বলেন, নিঃসঙ্গতার সঙ্গে অল্প বয়সে মৃত্যুর বিষয়টি যুক্ত। আর এটি মুটিয়ে যাওয়া সমস্যার চেয়েও খারাপ বলে অভিমত তার। দিন দিন বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ায় নিঃসঙ্গতা আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ সমস্যা হিসেবে হাজির হচ্ছে বলে দাবি ডেভিড ম্যাককাললাফের। তিনি উইমেনস রয়্যাল ভলান্টারি সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা যুক্তরাজ্যে ৪০ হাজারেরও বেশি প্রবীণ ব্যক্তির কল্যাণে কাজ করছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশক ধরে চালানো বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্কদের ১০ শতাংশ সব সময় একাকিত্ব বা খুব নিঃসঙ্গবোধ করে। যুক্তরাজ্যে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে নিঃসঙ্গতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা ১০ লাখের বেশি।
ভারত সরকার গান্ধীর চিঠি-ছবি কিনে নিল
প্রায় ৬ কোটি রুপি দিয়ে মহাত্মা গান্ধীর হাজারো চিঠি, কাগজপত্র ও আলোকচিত্র কিনে নিয়েছে ভারত সরকার। লন্ডনে ওই জিনিসপত্র নিলামে ওঠার একদিন আগেই সেগুলো কিনে নেয়া হয় বলে সমপ্রতি দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা জানান। ওইসব চিঠি ও কাগজপত্রে গান্ধীর দক্ষিণ আফ্রিকায় কাটানো সময়, ভারতে ফিরে আসা এবং পরিবারের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। ১০ জুলাই এই নিলাম হওয়ার কথা ছিল। সবকিছু ভারত সরকার কিনে নেয়ায় নিলাম অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এসব কাগজপত্রে গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গিসহ অন্যান্য অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে, যা ভারতীয়দের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের নয়াদিল্লিতে জাতীয় সংগ্রহশালায় এগুলো রাখা হবে। এসব কাগজপত্র জার্মান বংশোদ্ভূত ইহুদি স্থাপত্যবিদ হারমেন কালেনবাখের আত্মীয়স্বজনের কাছে ছিল। ১৯০৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধীর সঙ্গে হারমেনের পরিচয় হয়। দীর্ঘ ২০ বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালে গান্ধী জনগণের অধিকার ও অহিংস দর্শনের আন্দোলন শুরু করেন। ওই সময় তার মতাদর্শে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন হারমেন। ১৯১৫ সালে গান্ধী ভারতে ফেরার পরও দু’জনের বন্ধুত্ব অক্ষুণ্ন ছিল। পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী লেখক জোসেফ লেলিভেল্ডের লেখা গান্ধীর জীবনীতেও তাদের এই বন্ধুত্বের বিষয়টি উঠে এসেছে।