The Dhaka Times
তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে রাখার প্রত্যয়ে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সামাজিক ম্যাগাজিন।

redporn sex videos porn movies black cock girl in blue bikini blowjobs in pov and wanks off.

নন্দিত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদকে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে ॥ নুহাস পল্লীতে চির নিদ্রায়

ঢাকা টাইমস্‌ রিপোর্ট ॥ এ যেনো বাঁধভাঙ্গা মানুষের এক লড়াই। গতকাল ২৩ জুলাই নন্দিত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদকে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। শহীদ মিনার এলাকা মনে হচ্ছিল একুশের প্রহর।
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদকে বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে ॥ নুহাস পল্লীতে চির নিদ্রায় 1
হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রের সেই গানটি আজ সকলের মনে বড় বেশি করে মনে করে দিচ্ছে, ‘শোয়া চান্দ পাখি আমার, আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি।’ নন্দিত এই কথা সাহিত্যিকের শেষ বিদায় জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসা অগণিত ভক্ত, পাঠক, বন্ধু, সহকর্মী, ছাত্র ও স্বজনের মনে যেন হুমায়ূনের প্রিয় এই গানের আকুতিই ঘুরেফিরে হৃদয়ে দাগ কেটেছে। তাদের কারও অশ্রুই বাধ মানেনি। শহীদ মিনারে ছিল অশ্রুসজল লাখো মানুষের ঢল। প্রিয় লেখক আর সবার প্রিয় হয়ে ওঠা এই মানুষটিকে একনজর দেখার জন্য যে কী ব্যাকুলতা, তা লক্ষ্য করা গেল শহীদ মিনার থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত ভক্তদের দীর্ঘ সারি দেখে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ছাড়াও স্কুলপড়-য়া কিশোর-তরুণীরা দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করছিল সকাল থেকেই। সারিবদ্ধভাবে পায়ে পায়ে এগিয়ে এসে অগণিত ভক্ত, পাঠক ও অনুরাগী ফুলেল শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়েছেন, চোখের জলে জানিয়েছেন শেষ বিদায়।

কেও কেও হলুদ পাঞ্জাবি পরে এসেছেন সেই হিমু সেজে। কেওবা এসেছেন, কদম ফুল হাতে নিয়ে। কারণ হুমায়ূন আহমেদ কদম ফুল পছন্দ করতেন। তাঁর লেখনিতেও সেটি প্রকাশ পেয়েছিল। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে গতকাল ২৩ জুলাই সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধরে এসে পৌঁছায় হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ। সেখানে তাঁর পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বিমান বন্দরে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে ১০টা ২২ মিনিটে তার কফিনবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি শহীদ মিনারে পৌঁছায়। প্রিয় লেখককে শেষবারের মতো দেখতে সকাল ৮টা থেকেই সেখানে ভিড় করে অগণিত মানুষ।

হুমায়ূন আহমেদের কফিন রাখা হয় শহীদ মিনার চত্বরের উত্তর পাশে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নির্মিত শোকমঞ্চে। লাল গালিচা দিয়ে হেঁটে এসে সবার আগে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে লেখকের কফিনে ফুল দেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কাজী ফখরুদ্দিন আহমেদ। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফুল দেন তার বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল এবং প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর। শোকমঞ্চে কফিনের পেছনে উপস্থিত ছিলেন হুমায়ূনের প্রথম স্ত্রীর তিন সন্তান নোভা, শীলা ও নুহাশ, লেখকের দুই ভাই আহসান হাবীব ও জাফর ইকবাল, তাদের দুই বোন, জাফর ইকবালের স্ত্রী ইয়াসমীন হকসহ অন্যরা। কিছুক্ষণ পর হুমায়ূনের মা আয়েশা ফয়েজ এবং তারপর লেখকের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন উপস্থিত হন শোকমঞ্চে। এ সময় তরুণ নুহাশকে কফিন জড়িয়ে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়। তার পরনে ছিল বাবার সৃষ্ট চরিত্র হিমুর সেই হলুদ পাঞ্জাবি। হুমায়ূনের দীর্ঘদিনের বন্ধু প্রবীণ সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী ও সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকও কফিনের পাশে বসে ছিলেন বিষণ্ন মুখে।

আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় সংসদের উপনেতা ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ এবং জাহাঙ্গীর কবির নানক ফুল দিয়ে হুমায়ূনের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। সাজেদা চৌধুরী বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র ও শামসুর রাহমানের মতো হুমায়ূন আহমেদও আমাদের সাহিত্যে অমূল্য অবদান রেখে গেছেন। তিনি আমাদের দেশের তরুণ সমাজকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। নাটক ও চলচ্চিত্রে তিনি অনবদ্য অবদান রেখে গেছেন।’ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের পক্ষে সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও নারীনেত্রী শিরিন আক্তার ফুল দেন।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘হুমায়ূন এমন লেখক ছিলেন যে তার বই আমি বইমেলা থেকে কিনে আনার পর পড়া শেষ না করে থাকতে পারিনি। শুধু সাহিত্য নয়, চলচ্চিত্র, নাটকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি তার জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। ব্যক্তিগতভাবেও তিনি ছিলেন আমার খুব কাছের।’

খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাহিত্য, চলচ্চিত্র ও নাটকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদান রেখে হুমায়ূন চলে গেলেন। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।’ হুমায়ূন আহমেদের অবদান জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, হুমায়ূনের কিছু লেখা স্কুল কলেজের পাঠ্যসূচিতে আনারও চিন্তাভাবনা চলছে।

বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার পক্ষে হুমায়ূনের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম ও খায়রুল কবির খোকন বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান।

এছাড়া তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, পূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরিন শারমিন, বুয়েট ভিসি এসএম নজরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শহীদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা আসম আবদুর রব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আআমস আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মেজবাহউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহীদুল হক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মনিরুজ্জামান মিয়া, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান মির্জা আবদুল জলিল, দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, সুলতানা কামাল, ফকির আলমগীর, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনিসুল হক, জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, ছড়াকার আখতার হুসেন, আবদুল কুদ্দুছ বয়াতী, নাট্যজন আতাউর রহমান, নায়ক ফেরদৌসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও দল এবং নানা শ্রেণী পেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন এই লেখককে। তবে প্রিয় লেখকের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়নি কারোই। মরদেহের অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে মুখ ঢেকে রাখা হয়।

তিন ঘণ্টাব্যাপী এ শ্রদ্ধানুষ্ঠানের পুরো সময়জুড়ে হুমায়ূন আহমেদের কফিনের পাশে ছিলেন তার পুত্র নুহাশ হুমায়ূন, দুই মেয়ে নোভা ও শীলা আহমেদ, দুই ভাই ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব, দুই বোন সুফিয়া হারুন ও মমতাজ আহমেদ এবং সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট চরিত্র ‘হিমু’র মতো হলুদ পাঞ্জাবি পরে ছিলেন নুহাশ। নির্বাক দৃষ্টিতে আর শক্ত মুখে তিনি ছিলেন বাবার মতোই অবিচল। পুরো সময় বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়লেও নুহাশ ছিলেন পাথরের মূর্তির মতো ভাবলেশহীন।

বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নন্দিত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদকে গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। বাংলা একাডেমী, শিল্পকলা একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, এফডিসি, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, গণফোরাম, ঢাকা কলেজ, উদীচী, ইটিভি, কপিরাইট অফিস, জাতীয় গ্রন্থাগার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, এনটিভি, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, অন্যপ্রকাশ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ভাওয়াইয়া গানের দল প্রতিসৃষ্টি, জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

সকলকে কৃতজ্ঞতা জানালেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল

শ্রদ্ধানুষ্ঠান শেষে হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ আমার ভাই। এখানে এসে বুঝেছি তিনি শুধু আমাদের পরিবারের নন, দেশের প্রত্যেক পরিবারের। তিনি কারও ভাই, কারও সন্তান।’ তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন ভাইকে যারা দেখতে পাননি, তাদের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তিনি না থাকলেও, আপনাদের ভালোবাসা অনুভব করছেন। আমি সবার প্রতি এখানে আসার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিনি তার লেখা, চলচ্চিত্র দিয়ে সবাইকে আনন্দ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আপনারা যদি আনন্দ পেয়ে থাকেন তাহলে আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। যেন তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, যেন আনন্দে থাকেন।’ শ্রদ্ধানুষ্ঠান শেষ হয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। দেশের প্রতিটি সংস্কৃতিকর্মীর পক্ষ থেকে তিনি বলেন, “হুমায়ূন আহমেদ একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে যে লাখ কোটি মানুষের হূদয় জয় করেছেন, তার প্রমাণ আজকের এ উপস্থিতি। তিনি শুধু সাহিত্যকর্মই রচনা করেননি, বানিয়েছেন নাটক, চলচ্চিত্র। যার মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য উঠে এসেছিল। তিনিই প্রথম ‘তুই রাজাকার’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।” তিনি বলেন, ‘তিনি তার মেধা দিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ঘটনাপ্রবাহ সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় তুলে ধরেছিলেন। তিনি আপনাদের সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন, আমি এটাই আশা করি।’ বাংলাদেশ টেলিভিশন ছাড়াও পাঁচটি বেসরকারি টেলিভিশন শহীদ মিনার থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। শহীদ মিনারে খোলা হয় দুটি শোক বই।

দীর্ঘ নয় মাস ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করার পর হুমায়ূন আহমেদ ৬৪ বছর বয়সে ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতালে মারা যান। ২৩ জুলাই সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে তার কফিনবাহী বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছে। সুসজ্জিত একদল পুলিশ সদস্য কাঁধে করে বিমান থেকে তার কফিন নামিয়ে নিয়ে যান ফুলে ফুলে সাজানো একটি অ্যাম্বুলেন্সে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ও মানজারুল ইসলাম সুইট।

কুসুম তুমি আমাকে নুহাশ পল্লীতে নিয়ে যেও

নুহাশ পল্লীর মাটির প্রত্যেকটি ইঞ্চি তার চেনা, প্রতিটি ঘাস তার চেনা। আপনারা দয়া করে তাকে সেখানেই দাফনের ব্যবস্থা করুন। তাকে আর কষ্ট দেবেন না। অন্য কোথাও নিয়ে গেলে সে ভয় পাবে। অচেনা জায়গায় ও ভয় পায়। দেশে ফিরেই কান্না মিশ্রিত দুর্বল গলায় এভাবেই তার প্রয়াত স্বামী দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দাফনের ব্যাপারে মতামত জানান মেহের আফরোজ শাওন। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, তার শেষ ইচ্ছা ছিল নুহাশ পল্লীতেই। অপারেশনের আগের রাতে সে আমাকে বলেছিল, আমার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমাকে নিয়ে সবাই টানাটানি করবে। কুসুম (শাওন) তুমি আমাকে নুহাশ পল্লীতে নিয়ে যেও। আমাকে নিয়ে টানাটানি করতে দিও না। ২৩ জুলাই সকালে হুমায়ূন আহমেদের মৃতদেহ নিয়ে দেশে ফেরার পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বসে তিনি একথা বলেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন মেহের আফরোজ শাওন। এ কয়েকদিনের শোকে এতটাই বিহ্বল সে, উঠে দাঁড়ানোর শক্তিও তার ছিল না। এজন্য বিমান থেকে হুইল চেয়ারের সাহায্যেই তাকে নামানো হয়। কাঁদতে কাঁদতে পানিশূন্য দুর্বল চোখ জোড়া বন্ধ রেখে দু’হাত জোড় করে তিনি বারবার একই অনুরোধ করেন যেন হুমায়ূন আহমেদকে নুহাশ পল্লীতেই চিরদিনের মতো ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়। তিনি বলেন, ‘অন্য কোথাও দাফন করা হলে আমার সন্তানদের বাবার আত্মা কষ্ট পাবে। এ সময় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ তাকে সান্ত্বনা দেন এবং বলেন, তার কথামতোই সবকিছু করা হবে। কাঁদতে কাঁদতে আরও দুর্বল হয়ে গেলে তার মা তহুরা আলী এমপি এবং বোন সেঁজুতি দ্রুত সেখান থেকে শাওনকে নিয়ে যান। মায়ের কান্না আর লোকজনের ভিড় দেখে সেখানেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে শাওনের ছোট ছেলে নিনিদ। ছোট ভাইয়ের কান্না থামাতে তখনই তাকে কোলে নিয়ে ভিড় ঠেলে বেরিয়ে যায় তাদের বড় ছেলে নিষাদ।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শাওন

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও শাওন হুমায়ূন আহমেদের দাফন সম্পর্কে একই মিনতি জানান। নিজের হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতেই তাকে দাফন করার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়ে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, এটাই ছিল লেখকের শেষ ইচ্ছা। শাওন বলেন, আমি শুধু একটা কথাই জানি। নুহাশ পল্লীকে সে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসত। প্রতিটি গাছ তার নিজের হাতে লাগানো। এসব গাছের সঙ্গে সে কথা বলত। আমাকে সে বলেছে, যদি আমার কিছু হয় সবাই আমাকে নিয়ে টানাটানি করবে। তুমি আমাকে নিয়ে টানাটানি করতে দিয়ো না। তুমি আমাকে নুহাশ পল্লীতে নিয়ে যেও। ওই গাছগুলোর কাছে আমাকে দিয়ে এসো। মৃত্যুর আগে হুমায়ূন আহমেদ তার কোন অচেনা জায়গায় তাকে দাফন করতে নিষেধ করেছিলেন বলেও উল্লেখ করেন শাওন।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা শেষে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নেওয়া হয় নন্দিত কথা সাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদকে। সেখানে লক্ষ মানুষের ঢল নামে। বর্তমান মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছাড়াও সেখানে সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।

ফিরে দেখা

হুমায়ূনের বন্ধু ও স্বজনরা জানান, অত্যন্ত স্নেহের তিন কন্যাকে ‘আম্মা’ বলে ডাকতেন হুমায়ূন আহমেদ। মেয়েরাও বাবা ছাড়া একটি মুহূর্ত কাটানোর কথা চিন্তা করতে পারত না। এভাবেই বেড়ে ওঠে তারা। কিন্তু হুমায়ূনের দ্বিতীয় সংসার অনেক কিছুই এলোমেলো করে দেয়। ২০০৫ সালে গুলতেকিনের সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় হুমায়ূন আহমেদের। একই সময় বাবার সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তিন কন্যার। লম্বা সময় পর পুত্র নুহাশকে কাছে পেলেও মেয়েদের সঙ্গে দেখাটুকুও হতো না তার।

নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় লেখা একাধিক বইতে সে বর্ণনা পাওয়া যায়। একটি বইয়ে তিনি আলাদাভাবে স্মৃতি রোমন্থন করেছেন তিন কন্যার। স্বভাবসুলভ সহজ বর্ণনা দিয়েছেন। শিলা সম্পর্কে হুমায়ূন লেখেন, তখন শিলার বয়স বারো কিংবা তেরো। সবাইকে নিয়ে লসঅ্যাঞ্জেলেস গিয়েছি। হোটেলে ওঠার সামর্থ্য নেই। বন্ধু ফজলুল আলমের বাসায় উঠি। আমি ক্যাম্পিং পছন্দ করি ফজলু জানে। সে বনে ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করল। আমরা জঙ্গলে এক রাত কাটাতে গেলাম। প্রচণ্ড শীত পড়েছে। তাঁবুর ভেতর জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছি। এক সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। গভীর রাতে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দে ঘুম ভাঙল। দেখি, শিলা বসে আছে। ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমি বললাম মা, কি হয়েছে? শিলা জানায়, তার দম বন্ধ হয়ে আসছে, সে নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। আমি বুঝলাম, এই মেয়ের কঠিন ক্লস্টোফোবিয়া। আসলেই সে নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে না। আমি বললাম, গরম কাপড় পরো। তাঁবুর বাইরে বসে থাকব। সে বলল, একা একা থাকতে পারব না। ভয় লাগে। কিছুক্ষণ একা থাকতে গিয়েছিলাম। আমি বললাম, আমি সারারাত তোমার পাশে থাকব। এক পর্যায়ে আমার কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাল শিলা। সকাল হল। মেয়ের ঘুম ভাঙল। সে বলল, বাবা, তুমি একজন ভালো মানুষ। হুমায়ূন লিখছেন, আমি বললাম, আম্মা! পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই।

হুমায়ূন আহমেদের শেষ ঠিকানা নুহাস পল্লী

হুমায়ূন আহমেদকে ২৪ জুলাই দাফন করার সিদ্ধান্ত হলেও কোথায় তাকে সমাহিত করা হবে তা নিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ পরিবারের একটি অংশ ঢাকা বুদ্ধিজীবি কবরস্থান অথবা ঢাকার অন্য কোন স্থানে দাফনের পক্ষে বলেন। হুমায়ূন আহমেদের দুই কন্যা ও বড় ছেলে নুহাস বলেন ঢাকাতেই সমাহিত করার জন্য। যে কারণে এ নিয়ে বেশ দেন দরবার শুরু হয়। প্রথমে দুই মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে বৈঠক করেন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। এর পর রাত ১০টা থেকে প্রায় ১টা পর্যন্ত বৈঠক করেন হূমায়ুন আহমেদের বাসভবর ‘দখিনা হাওয়া’য়। স্ত্রী শাওনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকেও কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ওই রাতেই আবার বৈঠক হয় জাহাঙ্গীর কবির নানকের বাসায় সেখানে হূমায়ুন আহমেদের ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কর্তা ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় নুহাস পল্লীতে দাফনের জন্য। কারণ হুমায়ূন আহমেদের শেষ ইচ্ছা ছিল নুহাস পল্লীতেই যেনো তাঁকে শায়িত করা হয়।

মন্ত্রিসভার শোক

নন্দিত কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ ও স্থপতি মাজহারুল ইসলামের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে শোকপ্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পরে মন্ত্রিসভার সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করেন। বৈঠক শেষে সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো
Loading...
sex không che
mms desi
wwwxxx
bn_BDBengali