দি ঢাকা টাইমস ডেস্ক ॥ আজ আমরা বিশ্বের বিভিন্ন মজার মজার খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরবো- আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখবে বৈদ্যুতিক বাইক
সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী মোটরসাইকেল আবিষ্কার করেছে একটি প্রতিষ্ঠান। সি-১ নামের এই সাইকেলটি দুই চাকায় নিজেই নিজের ভারসাম্য রক্ষা করে চলবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক টু হুইলার ইলেকট্রিক ভেইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লিট মটর্স এই ইলেকট্রিক মোটরসাইকেলটি তৈরি করেছে। এর আগে অনেকেই থ্রিডি গ্রাফিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাধিক সেলফ ব্যালান্সিং টু হুইলার মোটরসাইকেলের ডিজাইন করেছেন। কিন্তু কম্পিউটারের মনিটর থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম মোটরসাইকল তৈরির সফলতা প্রথম অর্জন করল লিট মটর্সের ইঞ্জিনিয়াররাই। এই সাইকেলটি দেখতে অন্যান্য বাইকের চেয়ে একটু আলাদা। দূর থেকে দেখলে একে মোটরসাইকেল নয় বরং টানা ন্যানোর মতোই মনে হবে। মূলত সি-১ একটি পুরোপুরি কার্যক্ষম টু হুইলার ইলেকট্রিক মোটরবাইক। আর সি-১ সেলফ ব্যালেন্সিং-এর পেছনের মূল রহস্য হচ্ছে এর দু’টি অনবোর্ড ইলেকট্রনিক জাইরোস্কোপ। এই জাইরোস্কোপ দু’টির বদৌলতেই নিজেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে দুই চাকার এই মোটরসাইকেলটি! এখনও এটি প্রোটোটাইপ পর্যায়ে থাকলেও নির্মাতারা এর পরীক্ষা চালিয়ে সফল হয়েছেন।
সাপের দ্বীপ ॥ একবারে একটি সাপ বাচ্চা দেয় ৫০টি!
‘ইহা ডি কুইমাডা গ্রান্ডি’ দ্বীপটি দখল করে রেখেছে সাপেরা। ব্রাজিলের উপকূল এলাকা থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরের এই দ্বীপটিতে এত বেশি সাপের বাস যে, মাটিতে পা ফেলার জায়গা পাওয়াটাও দুষ্কর। সাপগুলোও খুব বিষধর। এক ছোবলেই সেগুলো যে পরিমাণ বিষ উগড়ে দেয়- সঙ্গে সঙ্গে মরে যেতে পারে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ। গোল্ডেন ল্যান্সহেড নামের এক প্রজাতির সাপের বংশবৃদ্ধির হারও খুব বেশি। একটি সাপ একবারেই বাচ্চার জন্ম দিতে পারে প্রায় ৫০টি। সাপগুলোর প্রধান খাবার উড়ে আসা সামুদ্রিক পাখি। উড়তে উড়তে ক্লান্ত পাখিদেরই খেয়ে বেঁচে আছে তারা। দ্বীপে মনুষ্য বসতি নেই, পর্যটকদেরও যাওয়া নিষিদ্ধ। শুধু গবেষণার জন্য অনুমতি নিয়ে যেতে পারেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে যাওয়ার সাহস কি হবে আপনার?
আলো ছড়ানো হাঙ্গর
পৃথিবীতে বিচিত্র প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম হল ‘স্মলআই পিগমি শার্ক’, এটি পৃথিবীর অন্যতম ছোট জাতের হাঙ্গর। এই প্রাণীটি অন্য প্রাণীদের আক্রমণের জন্য বিচিত্র ধরনের পথ অবলম্বন করে। কোন প্রাণী এদের আক্রমণ করলে এরা আত্মরক্ষার্থে পানির উপর থেকে আসা নীল আলোর মতো নিজেদের পেট থেকে আলো ছড়ায়। ফলে পানির নিচে অবস্থান করা শিকারিদের বোকা বানিয়ে চোখে সহজেই অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে এই হাঙ্গর। পৃথিবীর ১০ ভাগের এক ভাগ হাঙ্গর আলো জ্বালাতে পারলেও শার্ক বায়োলজির সবচেয়ে রহস্যময় দিক এটি। এক্ষেত্রে স্মলআই পিগমি শার্ক নিয়ে বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কার অনেক অজানা প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে। সমুদ্রের গভীর তলদেশের অন্ধকার থেকে তাকালে উপর থেকে আসা আলোকে উজ্জল নীল মনে হয়। আর সেই আলোর বিপরীতে সাঁতার কেটে যাওয়া যে কোন প্রাণীকে ছায়ার মতো দেখা যায়। সেই ছায়া দেখেই গভীর জলের শিকারিরা নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নেয়। এমন অবস্থায় শার্কটির উজ্জ্বল নীল আলোর কারণে পানির উপর থেকে আসা আলোর বিপরীতে কোন ছায়া সৃষ্টি হয় না। এর ফলে গভীর পানির শিকারির চোখে একরকম অদৃশ্যই হয়ে যায় স্মলআই পিগমি শার্ক। বিচিত্র এই চরিত্রের কারণে খুব সহজেই প্রাণীটি বিজ্ঞানীদের নজরে পড়ছে। তাছাড়া এই প্রাণীটিকে নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষণা চলেছে পৃথিবী জুড়ে।
হাতি উৎসব
আমাদের উৎসব থাকলে কেন থাকবে না হাতিদের- ভাবনাটি পোড়াচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। সে জন্যই সুপ্রাচীনকালের সঙ্গীদের অন্তত একটি দিন হাসি-আনন্দে কাটানোর ব্যবস্থা করে দিতে তারা চালু করলেন ঐতিহ্যবাহী এক উৎসব। ‘দ্য এলিফ্যান্ট ফেস্টিভ্যাল’ বা ‘হাতি উৎসব’-এ বর্ণিল পোশাকে ঘুরে বেড়ানো হাতিদের দেখার জন্য জড়ো হন সারা বিশ্বের মানুষ। ভারতের রাজস্থান প্রদেশের রাজধানী জয়পুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসব এটি। প্রধান আকর্ষণ অতিকায় প্রাণীটি। আয়োজন করা হয় হোলি উৎসবের, সময় মার্চ মাসে। মাহুতরা বিশাল হাতিটি সাজিয়ে-গুছিয়ে হাজির করেন মাঠভর্তি দর্শকদের সামনে। সে এক দেখার মতো দৃশ্য। বিশাল বিশাল বালা পরে, ঘণ্টা গলায় বেঁধে সার বেঁধে আসে হাতিগুলো। শরীরজুড়ে উজ্জ্বল, চোখ ধাঁধানো আঁকিবুঁকি। গায়ে আঁকা ঐতিহ্যবাহী ‘মোটিফ’ বা নকশা। স্ত্রী হাতিগুলো যখন হাঁটে, টুংটাং বাজতে থাকে পায়ে বাঁধা নূপুর। তবে শুধু হাতিই নয়, উৎসবে অংশ নেয় উট, এমনকি ঘোড়াও। নাচে-গানে মাতানোর জন্য থাকে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য।
মালিকরা গর্বের সঙ্গে হেঁটে আসেন সঙ্গে। অনেকে হাজির হন রাজকীয় কায়দায়, হাতির পিঠে চড়ে। পিঠের ওপর বসে চারদিকে ছিটান রঙিন পাউডার- ‘গুলাল’, সব হাতির পিঠেই থাকে বাহারি ঝুল। মালিক বা মাহুতের পরনেও নকশাদার পোশাক, মাথায় রঙিন পাগড়ি! সাজসজ্জা দিয়ে যেটি জয় করতে পারে বিচারকদের মন, সেই হাতি আর মাহুতকে দেওয়া হয় পুরস্কার।
এত হাতি আর মানুষের সমাগম ঘটে যেখানে, সেখানে খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকবে না, তা কি হয়? হাতি উৎসবের আরেক আকর্ষণ হাতির পোলো এবং হাতিদৌড়। তবে সবচেয়ে মজা হয় দড়ি টানা খেলায়। একদিকে উনিশজন নর-নারী, অন্য পাশে একটি মাত্র হাতি! কি দারুণ মজায় না হয় সেই অনুষ্ঠানে।