ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কালে কালে যে আর কত কি দেখতে হবে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এতদিন জেনেছি মাছ ব্যবসায়ীরা ফরমালিন দিয়ে মানুষকে ঠাকচ্ছে কিন্তু এবার নতুন এক স্টাইল তারা রপ্ত করেছে। আর তা হলো আলোর ফাঁদে ফেলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া।
মাছ ব্যবসায়ীদের এবার শুধু ফরমালিন কিংবা অন্য কোনো ভেজাল দিয়ে পোষাচ্ছে না। তাইতো লোক ঠকাতে এবার অভিনব ও প্রযুক্তি-নির্ভর কৌশল ব্যবহার করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। আলোর ফাঁদ বানিয়ে তাঁরা প্রতারণা করছেন ক্রেতাদের সঙ্গে। তাই চকচকে রূপালি মাছ কিনে বাসায় ফিরে দেখা যাচ্ছে, সেগুলো আসলে ফ্যাকাসে ও পচা। তাহলে বাজারে কেন চকচক করছিল এখানেই লুকানো প্রতারণার মূল রহস্য। মাছের দোকানে আলোর ফাঁদে পা দিয়েছিলেন ক্রেতা। মাছ আরো চকচকে ও টাটকা দেখানোর কৌশল হিসেবে ব্যবসায়ীরা নানাভাবে কাজে লাগান
মাথার ওপর ঝোলানো বৈদ্যুতিক বাতিগুলোকে। ওই সব বাতির ওপরে লাগানো থাকে বিভিন্ন রঙের কাগজ। কাগজের আলো প্রতিফলিত হয়ে চকচক করে মাছগুলো। আবার সব ধরনের মাছের জন্য একই আলো ব্যবহৃত হয় না। মাছের রং ভেদে বদলে যায় কাগজের রং। যেমন সবুজাভ মাছের ওপর ঝোলানো বাতির গায়ে থাকে সবুজ রঙের কাগজ। আর রূপালি ধরনের মাছের ওপরে থাকে সাদা কাগজে মোড়ানো বাতি! একেকটির মাঝখানে দূরত্ব মাত্র এক থেকে দুই ফুট। মাছের থালার এক থেকে দুই ফুট ওপরে এসব বাতি জ্বলতে থাকায় মাছগুলো দেখাচ্ছে উজ্জ্বল আর দারুণ চকচকে। বিভিন্ন ধরনের মাছের ওপরে বিভিন্ন রঙের কাগজে মোড়ানো বাতি। চিংড়ির থালার ওপরে সবুজ বাতি। ইলিশের ওপর সাদা। আবার আইড়, টেংরা ইত্যাদি মাছের থালার ওপর যে বাতি, তার গায়ে হলুদ কাগজের আবরণ।
জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের এই অভিনব কৌশলে বিভ্রান্ত হয়ে মাছ বাজারে প্রায়ই ধরা খাচ্ছেন ক্রেতারা। যাঁরা কম খেয়াল করে মাছ কিনছেন, তাঁরাই সহজে এ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। মোটামুটি হিসাবে একেকটি বাজারে এমন ৫০টি বাতি ব্যবহার করা হলে সারা দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে লাখ লাখ বাতি। অসৎ উদ্দেশ্যে দিনভর এসব বাতি জ্বালিয়ে রেখে মূল্যবান বিদ্যুতেরও অপচয় করা হচ্ছে। আবার বাজারে ব্যবহৃত বাতিগুলো বিদ্যুৎসাশ্রয়ীও নয়। ব্যবহার হচ্ছে সনাতন বাতি, যার বিদ্যুৎ খরচ অনেক বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেলো।
জানা গেছে, বাসি মাছকে তাজা দেখাতে আরো কিছু কৌশল ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। এগুলোর একটি হলো রং মেশানো। বিশেষ করে পারশে ও টেংরা মাছে হলুদ রং মেশানো হয়। কখনো মসলার হলুদ অথবা বাসন্তী রং মেশানো হয়। বাসন্তী রং মেশানো হয় মাছ বেশি পচা হলে। মাছের পানিতে লবণ বা ফিটকিরি মেশানোর কৌশল পুরনো। আড়তে অথবা বাজারে এসব মাছ আসার পরপরই তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। ওই পানিতে থাকে ফিটকিরি অথবা লবণ। অনেক সময় বরফেও লবণ বা ফিটকিরি ব্যবহার করা হয়।