দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নয় মাসের একটি বালক শিশুকে তার দাদার সাথে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছে পাকিস্তানের একটি আদালত। শিশুটির নাম মোহাম্মদ মুসা। শিশুটিকে সহ আরো প্রায় ৮ জনকে ঘিরে গত বৃহস্পতিবার আদালত এই রায় প্রকাশ করে। এরফলে সারা পাকিস্তানে তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে।
পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে লাহোরে পুলিশ রেইডের সময় পাথর নিক্ষেপ করে পুলিশ হত্যা করতে চেয়েছিল বলে আদালত এই রায় দেয়। লাহোরের বস্তির এই অধিবাসীরা গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছিল না। ফলে পুলিশ রেইড দিয়ে তাদের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। আদালতের রায়ে বলা হয় কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপে ক্ষিপ্ত হয়ে কতিপয় অধিবাসী পুলিশদের পাথর নিক্ষেপ করে তাদের হত্যা করতে উদ্যত হয়। যার ফলশ্রুতিতে আদালত হত্যা মামলায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করে।
শুনানিতে প্রদর্শিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সংঘর্ষের সময় নয় মাসের বয়সী শিশুটি তার দাদার সাথে বসে আছে। বিচারক রাফায়াত আলীর আদালতে তাকেও দোষী সাব্যস্ত করেন এবং সংঘর্ষের সাথে জড়িত বলে রায় প্রকাশ করেন। চৌধুরী ইরফান সাদিক যিনি এই মামলায় শিশুটির পরিবারের হয়ে আদালতে লড়ছেন। এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন আদালতের উচিত এই মামলাটি এখনি বন্ধ করা। কারণ পাকিস্তানী আইন অনুসারে অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীর ন্যূনতম বয়স ১২ বছরকে আইনের মধ্যে ফেলা হয়। পাকিস্তানী আদালতের অপরাধ বিচার ব্যবস্থার হাস্যকর এই রায়ের ফলে সে দেশের সুশীল সমাজ তার তীব্র নিন্দা জানায়। এছাড়াও এটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বেশ ফলাও করে প্রকাশ করা হয়। বিশেষকরে শিশুটির হাতের ছাপ নেওয়ার সময় ক্রন্দনরত ছবিটি সবার নজরে আসে।
সাদিক আরো বলেন,”আদালতের উচিত এই বাচ্চা শিশুটিকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া কেননা সে অপরাধীর তালিকায় পড়ে না। এছাড়াও এই রায়ের মাধ্যমে পুলিশদের অপরাধী সনাক্তকরণে ভুল হবে এবং বিচারবিহীন হত্যা বেড়ে যাবে”। ইতিমধ্যে পুলিশ অফিসার কাশিফ মাহমুদ যে এই শিশুটিকে সহ হত্যা মামলাটি করেছেন তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শিশুটির বাবা যিনি গ্রেফতার হয়েছেন তিনিও বলেন,”পুলিশ ভুলভাবে তার শিশু এবং তাদেরকে ঘিরে এই মামলাটি করেছে। তারা সবাই ভুক্তভোগী”।
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে বিচারক রাফায়াত আলী মামলাটি থেকে শিশুটিকে অব্যাহতি দিয়েছে। গত শনিবার আদালতের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিচারককে জানানো হয় যে শিশুটি এই মামলার সাথে আর জড়িত নয়। শিশুটির দাদা এবং তার বাবাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। মামলার এজাহারে বলা হয় তারা সংঘর্ষের সময় সংঘর্ষকারীদের সাথে ছিল। কিন্তু শিশুটির বাবা আর তার দাদার বক্তব্য তারা ভুমিদস্যুদের থেকে শুধুমাত্র নিজেদের জায়গাটি রক্ষা করতে চেয়েছিল।
ভিডিও দেখুন
http://youtu.be/C7sL2vllWsY
তথ্যসূত্রঃ হাফিংপোস্ট