দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ এলেই ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামে পোশাকের সমারোহ শুরু হয়ে যায়। মা সিরিয়ালের ঝিলিক থেকে শুরু করে এমন কোন সিরিয়াল নেই যার পোশাক বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এবার কলকাতায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বাহা শাড়ি। অনলাইন নিউজ থেকে নেওয়া সেখবর আপনাদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
পূজা ও ঈদের সময় বাজারে নানা ধরনের ডিজাইনের শাড়ি ও জামাকাপড় দেখা যায়। প্রতি বছর উৎসব উপলক্ষে নিত্যনতুন ডিজাইনের আমদানি হয়। কিন্তু এ বছর পূজা ও ঈদের ফ্যাশনে জোর ঝটকা লাগিয়ে দিয়েছে জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ইষ্টিকুটুমের জনপ্রিয় কেন্দ্রীয় চরিত্র সাঁওতালি মেয়ে বাহামনি সোরেন। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট থেকে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান কিংবা মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেটের বিশেষ বিশেষ দোকানে বাহা শাড়ি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে তুলকালাম চলছে। বোলপুর বা পুরুলিয়ার বুটিকের দোকানেও বাহা শাড়ির চাহিদা যথেষ্ট। রাজ্য ছাড়িয়ে দিল্লিতেও বাহা শাড়ির চাহিদা তৈরি হয়েছে। মার্কিন মুলুকে তো টার্গেট নামের একটি দোকানে হটকেকের মতো বিক্রি হচ্ছে বাহা গহনা। শুধু শাড়িই নয়, বাহা যে ধরনের গহনা পড়ে এই পূজার মওসুমে সেগুলোরও চাহিদা তুঙ্গে বলে জানা গেছে। ইস্টিকুটুমে বাহা নানা সময়ে নানা ডিজাইনের শাড়ি পড়ে অভিনয় করেছে। তবে শাড়িগুলির বৈশিষ্ট্য হলো এগুলির উজ্জ্বল রঙের পাড়। দু’রঙের এই তাঁতের শাড়ির পাড় হয় তিন চার রঙের।
বাহা শাড়ির কদর কেমন জানতে গড়িয়াহাটের একটি নামী কাপড়ের দোকানে ঢুকে দেখি বাহা শাড়ির খোঁজ করতে এসেছেন বেশ কয়েকজন তরুণী। কিন্তু এই মুহূর্তে স্টক নেই বলে হতাশ হয়ে ফিরে গিয়েছেন। আবার একটি কলেজের বাংলার ছাত্রী সুচরিতা অনেক আগেই বাহা শাড়ির দখল নিয়ে রেখেছেন। বাহা শাড়ির চাহিদা দেখে তাজ্জব ইস্টিকুটুম সিরিয়ালের লেখক ও পরিচালক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনিই প্রথম শান্তিপুরের ফুলিয়ার তাঁতি চিরঞ্জিত বসাকের কাছ থেকে একটি শাড়ি নিয়েছিলেন। সেই শাড়িই দর্শকের মনে ধরেছে সিরিয়ালের জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে। অবশ্য মাঝে মাঝেই ডিজাইন পাল্টে দেয়া হয় এই শাড়ির। যেমন তাঁতের পর এবার সিল্ক বা তসরের শাড়িও পড়ানো হচ্ছে। উজ্জ্বল রঙের পাড় বহাল থাকছে। তবে এই বাহা শাড়ির স্রষ্টা ২২ বছরের যুবক চিরঞ্জিত ফুলিয়া তাঁতি পরিবারেরই ছেলে। বিএ অসম্পূর্ণ রেখেই পারিবারিক ব্যবসায় ঢুকে পড়েন। এই শাড়ি বিক্রি করতে এক সময় কলকাতা চষে বেড়িয়েছেন। তবে তখন কেউ কদর দেয়নি। ইস্টিকুটুম সিরিয়ালের দৌলতে চিরঞ্জিত এখন রীতিমতো ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। এক বছরের মধ্যেই বাড়ি-গাড়ি কিনে ফেলেছেন। আর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় ২০০ জনকে নিয়োগ করেছেন এই বাহা শাড়ি তৈরির কাজে। বিভিন্ন বুটিকে যেমন শাড়ি দিচ্ছেন তেমনি দেশের নানা প্রান্ত থেকেও তার কাছে অর্ডার আসছে। এমনকি বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজন বুটিক মালিক বাহা শাড়ির জন্য কলকাতায় ছুটে এসেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে জাঙ্ক জুয়েলারির দোকানগুলোতেও বাহা গহনা বিক্রি হচ্ছে বেশ ভালই।
বাংলাদেশের ক্রেতারা এখন অপেক্ষায় আছেন সামনের পূজা ও ঈদে বাহা শাড়ি কেনার জন্য।