দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফরমালিনসহ মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত খাদ্যদ্রব্য দেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত সকল বাজারে এই ধরনের রাসায়নিক পরীক্ষার যন্ত্র স্থাপন করতে বলেছেন আদালত। আগ্রহী ক্রেতার সামনে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
এ নিয়ে করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ গত ২১ নভেম্বর এই আদেশ দেন। আদেশে আদালত বলেছে, ফরমালিন ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য পরীক্ষা করতে স্থানীয় সরকার অনুমোদিত ও নিয়ন্ত্রিত সকল বাজারে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে হবে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রিত বাজারে এক মাসের মধ্যে যন্ত্র স্থাপন করবে হবে। অন্য বাজারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। আদালত আরো বলে, কেবল মানুষের ভোগের উপযোগী খাদ্যদ্রব্যই যেন দেশে প্রবেশ করতে পারে তা নিশ্চিতে দেশের সকল বন্দরেও রাসায়নিক পদার্থ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে হবে। বন্দরগুলোতে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য পরীড়্গা করতে হবে। পরীড়্গার পর ড়্গতিকর মাত্রার ফরমালিন ও অন্য রাসায়নিক পদার্থযুক্ত খাদ্য প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সকল গণমাধ্যমে রাসায়নিকের ক্ষতিকর দিকের বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরম্ন করতে আদালত তথ্য সচিবকে নির্দেশ দিয়েছে। বাণিজ্য সচিব, পরিবেশ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিল্প সচিব, মৎস্য সচিব, খাদ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিবকে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এছাড়াও আদালত তিনটি রুল জারি করে। এই রম্নলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যনত্ম অনত্মর্বর্তীকালীন এসব নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। রুলে খাদ্যদ্রব্যে ক্ষতিকর ফরমালিন ও অন্য যে কোনো রাসায়নিক পদার্থ প্রতিরোধ, এসব রাসায়নিক পদার্থ আমদানি, বণ্টন বন্ধ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং এ ধরনের রাসায়নিকের ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থ হয়েছে বলে কেন ঘোষণা করা হবে না জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য সচিব, পরিবেশ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিল্প সচিব, মৎস্য সচিব, খাদ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ২১ জনকে রম্নলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি রুলের শুনানি শুরু হবে।
রিটের পক্ষে এডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন, এডভোকেট ইকবাল কবির লিটন ও এডভোকেট মোঃ খায়রুল আলম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার শুনানি করেন। উল্লেখ্য, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআইয়) পরিচালক মোঃ হেলাল উদ্দিন গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টে এই রিটটি করেন।