দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিএনপিসহ ১৮ দলের ডাকা হরতাল শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পিকেটিংকালে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঈশ্বরদীতে ট্রেনের চালককে মারধর করা হয়েছে।
ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে হরতাল সমর্থকরা ভোর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। যাত্রাবাড়ীতে সকালে ১০টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও ৫টিতে ভাংচুর করা হয়। ফার্মগেটে ভোরে ২টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তেজগাঁও এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। শান্তিনগরে সকালে ৫টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে ১টি সিএনজিতে আগুন দেওয়া হয়। কাকরাইল মসজিদের সামনে খাদ্য সচিবের গাড়ি ভাংচুর করা হয়।
এদিকে বিএনপি অফিস এখন কার্যত অবরুদ্ধ। নয়াপল্টনের বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কায়ালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। কার্যালয়ের ভেতরে গতকাল ১০ ডিসেম্বর থেকেই বহু নেতা-কর্মী আটকে পড়েছেন। এদিকে হরতালে গাড়ি তেমন একটা রাস্তায় দেখা যায়নি। বিআরটিসি বাস দেখা গেছে। দু’একটি মিনিবাস চলতে দেখা গেছে। তবে বেশির ভাগ সড়কগুলো ছিল একেবারে ফাঁকা।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। রংপুরে নাবিল পরিবহনের একটি গাড়ি ও হানিফ পরিবহনের একটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পুলিশ মিছিলের চেষ্টা করলে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করা হয়।
ঈশ্বরদীতে রেল ইঞ্জিন ভাংচুর
আমাদের ঈশ্বরদী প্রতিনিধি জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংসন স্টেশনে একটি রেল ইঞ্জিন ভাংচুর করা হয়েছে। হরতাল সমর্থকরা এই হামলা করেছে বলে জানা গেছে। এ সময় তারা ইঞ্জিনের চালককেও মারধর করে। কোন বাস-টেম্পো চলছে না। দোকান-পাট, অফিস-আদালত প্রায় বন্ধ। কিছু রিক্সা ছাড়া ঈশ্বরদী শহর প্রায় স্তব্ধ।
সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে, ঈশ্বরদীতে হরতাল সমর্থক ও সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ যুবলীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে বেলা ১২টার দিকে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ঈশ্বরদীতে ৩টি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়াতে হামলা চালিয়ে এই ভাংচুর করা হয়। অপরদিকে ঈশ্বরদী আরজু মার্কেটে হামলা চালিয়ে সাপ্তাহিক হ্যালো ঈশ্বরদী নামে একটি পত্রিকা অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। এদিকে উভয় দলের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে। ব্যাপক সংঘর্ষের কারণে স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে পারছেন বলে জানানো হয়েছে।
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেফতার
গতকাল ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পোনে ৭টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শেষে বের হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। অবরোধে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার ১১ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তাকে মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করার পর এ আবেদন জানানো হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা। তথ্য: বাংলাদেশ নিউজ২৪।
এদিকে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেফতারের খবরে সারাদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করা হয়। ফার্মগেটে সন্ধ্যায় ক্যান্টনমেন্টে চলাচলকারী ৪নং গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়।