দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবার বাস ভাড়া বৃদ্ধির খগড়! দূরপাল্লার বাসে বাড়তি ভাড়া আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে। সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর গত ১৪ জানুয়ারি বি আরটিএ-এর একাধিক কর্মকর্তা গাবতলীতে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে মালিকদের সঙ্গে ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনলাইন পত্রিকার তথ্য।
এর আগে গত রোববার ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বি আরটিএ) কস্টিং কমিটি এক বৈঠকে কিলোমিটার প্রতি ১০ পয়সা বৃদ্ধি করে ১ টাকা ৩৫ পয়সার স্থলে, ১ টাকা ৪৫ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে। বৈঠকে বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪৫০ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা, ঢাকা-কক্সবাজার ৭৫০ টাকার স্থলে ৮০০ টাকা, ঢাকা-টেকনাফ ৮৫০ টাকার স্থলে ৯০০ টাকার করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার ১৯ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত ভাড়া কার্যকর করা হবে বলে অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানিয়েছে। দূরপাল্লার প্রতিটি রুটেই বর্তমান ভাড়ার চেয়ে কোথাও ৫০ আবার কোথাও ৭০ টাকা বাড়ানো হচ্ছে। যদিও বি আরটিএ-এর কোনো কর্মকর্তা ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ কামাল আহমেদ বলেন, বৈঠকে বাস ভাড়া বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসবেন মালিক পক্ষের সঙ্গে। তারপরই আমারা বর্ধিত ভাড়া আদায় করব। মালিক পক্ষ বলছে, সরকার গত ৩ জানুয়ারি রাতে ৪ ধরনের জ্বালানি তেলের লিটার প্রতি দাম ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে যাতায়াতে ১৮০ লিটার জ্বালানি তেল লাগছে। লিটারে ৭ টাকা হারে অতিরিক্ত ১ হাজার ২৬০ টাকা লোকসান হচ্ছে। এমনিভাবে প্রতি রুটে লোকসান গুনেই চালাতে হচ্ছে বাণিজ্যিক এই সেবা খাত। মালিক পক্ষের হিসাবে ঢাকা-কক্সাবাজার ২৪০ লিটার, ঢাকা-সিলেট ১৮০ লিটার, ঢাকা-বগুড়া ১৪০ লিটার জ্বালানির প্রয়োজন হচ্ছে। এসব জ্বালানি কিনতে মালিককে গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
এদিকে, রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীতে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রয়োজন নেই বলে মতামত দিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানিজের (এবিসি) প্রেসিডেন্ট খন্দকার রফিকুল হোসেন কাজল। তিনি বলেন- যেহেতু সিএনজির দাম বাড়ানো হয়নি, সেহেতু ব্যস্ততম দুই নগরীতে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো হলে যাত্রীদের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। মহানগরীর অধিকাংশ গণপরিবহনের জ্বালানি হচ্ছে সিএনজি গ্যাস। সরকার যেহেতু গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেনি, সেহেতু ভাড়াও বাড়ানো উচিৎ হবে না বলে মনে করেন তিনি। তবে, ইতিমধ্যেই দূরপাল্লার প্রতিটি বাস কোম্পানি তাদের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। সরকারি সিদ্ধান্তের আগেই বাস মালিকরা ৪০ টাকার ভাড়া ৭০ টাকা আদায় করছে। আর সিএনজি চালিত অটোরিকশা তো যাত্রীদের পেয়ে বসেছে। তারা মন গড়া ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে, যেন দেখার কেও নেই।
এদিকে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহনের মধ্যে বর্তমানে ৬০ শতাংশই পেট্রোল চালিত। ৪০ শতাংশ সিএনজি চালিত। সিএনজি চালিত যানবাহন ব্যয় বহুল হওয়ায় এখন কেও সিএনজি চালিত বাস আমদানি করছে না।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বি আরটিএ) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত রোববার ১৩ জানুয়ারি বি আরটিএ-এর কস্টিং কমিটি এক বৈঠকে দূরপাল্লার রুটের বাসভাড়া বর্তমান ভাড়া ১ টাকা ৩৫ পয়সার স্থলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ১ টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে। পর্যায়ক্রমে সকল রুটের বাস ভাড়া বাড়ানো হবে। বি আরটিএ-এর চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান গত ১৪ জানুয়ারি ভাড়া বৃদ্ধি বিষয়ে সচিবালয়ে বৈঠক করেছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। বৈঠকে ভাড়া চূড়ান্ত করা হবে।