Categories: সাধারণ

ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার শুরু: বিচার পাবে ফেলানীর পরিবার?

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ ভারতের বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার শুরু হওয়ায় বিচারের জন্য আশাবাদি ফেলানীর বাবা। মেয়েকে নির্মমভাবে যিনি হত্যা করেছেন তার বিচার হবে সে আশায় এখন আবার নতুন করে দিন গুণছেন।

গতকাল সোমবার ভারতের কুচবিহারের বিশেষ আদালতে বহুল আলোচিত কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানী হত্যার বিচার পুনরায় শুরু হয়েছে। কুচবিহারের বিএসএফ-এর সেক্টর সদর দপ্তরের বিশেষ আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার শুরু হয়।

কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ সাংবাদিকদের জানান, ‘ভারতের কুচবিহারে বিএসএফ সদর দপ্তরে স্থাপিত ওই বিশেষ আদালতের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে এই বিচার কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সাক্ষ্য দিতে ও আদালতকে সহযোগিতা করতে তিনি, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম, মামা আব্দুল হানিফ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন ভারতে যাবেন।’

Related Post

তিনি আরও বলেন, ফেলানী হত্যার সঠিক বিচার না পাওয়ায় ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় হাই কমিশনারের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে পুনর্বিচারের আবেদন করেন তার বাবা। এরপর শুরু হয় কূটনৈতিক তৎপরতা। পরে বিজিবি-বিএসএফ-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ফেলানী হত্যার পুনর্বিচারে রাজি হয় বিএসএফ।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এস এম আব্রাহাম লিংকন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে বিচার কার্যক্রমে অংশ নিতে তারা ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভিসাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও তৈরি করা হয়েছে। তারিখ পেলেই ভারতে যাবেন।

এদিকে ফেলানীর এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার না পেয়ে ফেলানীর শোকগ্রস্থ পরিবার বিমর্ষ জীবন যাপন করছিলেন। আবার আদালতে বিচারের জন্য যাওয়ার সুযোগে তারা আশান্বিত হয়েছেন। ফেলানীর বাবা সংবাদ মাধ্যমকে তার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমার মেয়েকে কোনোদিন ফিরে পাবো না। কিন্তু যে ব্যক্তি এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন তার বিচার হলে আমরা কিছুটা হলেও শান্তি পাবো।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত হতে ফেরার পথে মই বেয়ে উঠে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। ফেলানীর নিথর দেহ কাঁটাতারের উপর ঝুলে থাকে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। পরে বিএসএফ লাশ নামিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক আকারে প্রচার হলে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। যে কারণে পরদিন ৮ জানুয়ারি ফেলানীর লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।

দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ফেলানীকে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ ঝুলিয়ে রাখায় ব্যাপক সমালোচনা করে। শুধু তাই নয়, ভারতের গণমাধ্যমগুলোও সোচ্ছার ভূমিকা রাখলে কুচবিহারের বিএসএফ-এর বিশেষ আদালতে ২০১৩ সালের ১৩ অগাস্ট বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে ভারত। ওই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী এবং ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ। কিন্তু অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেকসুর খালাস দেয় ওই বিশেষ আদালত। পড়ুন সেই সংবাদ: “ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য নির্দোষ বলে রায়!”

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৪ 9:19 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর)…

% দিন আগে

ব্র্যাক ব্যাংক এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বেসিসের

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সদস্যদের জন্য…

% দিন আগে

৩ স্ত্রী, ২ বান্ধবী, ১০ সন্তানকে নিয়ে সংসার বেকার যুবকের!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৩ স্ত্রী, ২ বান্ধবী, ১০ সন্তানকে নিয়ে সংসার বেকার যুবকের!…

% দিন আগে

অবার এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পিরিয়ডকালীন কী ধরনের খাবার খেলে রক্তাল্পতার ঝুঁকি এড়ানো যাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণতভাবে দেখা যায়, বেশিরভাগ মহিলা রক্তাল্পতার ঝুঁকিতেই ভোগেন। পিরিয়ডের সময়…

% দিন আগে

এবার আসছে পারমাণবিক ব্যাটারি: চার্জ ছাড়াই ফোন চলবে ৫০ বছর!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খুব শীঘ্রই মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার ঝামেলার অবসান ঘটতে চলেছে।…

% দিন আগে